অনেক সময় দেখা যায় সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তি দিব্বি শক্ত সমর্থভাবে বেঁচে আছেন। আবার ৩০-৪০ বছর বয়সের একজন মানুষকেও কখনো খুব তাড়াতাড়ি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে দেখা যায়।
এ যেন বয়স বাড়ার আগেই বার্ধক্য জড়িয়ে ধরা। আসলে ক্যালেন্ডারের বয়সের সঙ্গে মানুষের দেহের বয়স সবসময় মিলতে চায় না।
মানবদেহের এহেন আচরণের জবাব বহু বছর ধরে খুঁজছে মানুষ। চেষ্টা করে আসছে কীভাবে দেহের বয়স ধরে রেখে সুস্থ-সুন্দরভাবে বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু নানা সময় নানা তত্ত্ব সামনে এলেও কোনোটাই পুরোপুরি প্রমাণ করা যায়নি।
তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন, যার মাধ্যমে পরীক্ষা করে জানা যাবে একজন মানুষের দেহের আসল বয়স কতো, অর্থাৎ আপনার বয়স বেড়ে ভালোর দিকে যাচ্ছে, না খারাপের দিকে।
লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষকদের ওই দলটি জানিয়েছেন, তাদের আবিষ্কৃত পদ্ধতিটি একজন মানুষ কখন মারা যাবে তা অনুমান করতে সাহায্য করবে।
শুধু তাই নয়, ডিমেনশিয়াসহ (মস্তিষ্কের বার্ধক্যজনিত দীর্ঘমেয়াদী রোগ) বড় ধরনের রোগগুলোর ঝুঁকি কাদের বেশি আছে তাও ধরা পড়বে পরীক্ষায়। যা প্রভাব ফেলবে চিকিৎসা, পেনশন এবং ইন্স্যুরেন্সের মতো বিষয়গুলোতে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই ‘জৈবিক বয়স’ জন্ম তারিখ অনুযায়ী ক্যালেন্ডারের বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী।
পরীক্ষাটিতে মানবদেহের কোষে থাকা দেড়শ’টি জিনের আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করে ‘বার্ধক্যের চিহ্ন’ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়।
প্রাথমিকভাবে ২৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী সুস্থ, কিন্তু বেশিরভাগ সময় ঘরে শুয়ে-বসে থাকা ব্যক্তিদের ৫৪ হাজার ধরনের জিনগত কার্যকলাপ পরীক্ষা করা হয়। পরে তা কমিয়ে দেড়শ’তে আনা হয়।
কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক জেমি টিমনস বলেন, এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষ বুঝতে পারবে ৪০ বছর বয়স থেকে কীভাবে জীবনযাপন করলে শরীর সুস্থ থাকবে। তবে বার্ধক্যের গতি রোধ করার কোনো উপায় গবেষণাটি প্রতিবেদনে বলা হয়নি।