মহান বিজয় দিবসের রাতে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমনের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরষ্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র ‘শুনতে কি পাও!’।
জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির উদ্যোগে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অনলাইন প্লাটফর্ম ভিমিয়োতে ছবিটির লিংক সবার জন্য উম্মুক্ত থাকবে।
অনলাইনে এই বিশেষ প্রদর্শনীর পর রাত ১০-৩০ টায় জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির ফেসবুক পেইজ এবং অফিসিয়াল ইভেন্ট থেকে এই লাইভ আড্ডায় যুক্ত হবেন কামার আহমাদ সাইমন।
আয়োজকরা সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, লাইভে যুক্ত হয়ে দর্শকরাও করতে পারবেন প্রশ্ন, দর্শকদের প্রশ্ন উপস্থাপকের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে কাছে। যার উত্তর তিনি খোলাখুলি লাইভেই দিবেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৬ সালের লোকার্নোর ওপেন ডোর্সের উদ্বোধনী ছবি ছিলো ‘শুনতে কি পাও!’। এর আগে প্যারিসের সিনেমা দ্যু রিলে ‘গ্রাঁপ্রি’ এবং মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে ‘স্বর্ণশঙ্খ’ এবং শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণের পুরষ্কার জয় করেছিলো ‘শুনতে কি পাও!’ ছবিটি আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজন, গুগল টিভি, আইটিউনসে পাওয়া গেলেও দেশের দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার জন্য আলোচনা ছিলো নেটিজেনদের মধ্যে। সেই সূত্রেই জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির উদ্যোগে এই আয়োজন।
বিশ্বের প্রাচীনতম প্রামাণ্যচলচ্চিত্র উৎসব জার্মানির ডক-লাইপজিসের উদ্বোধনী রাতে প্রদর্শিত হয়ে প্রথম আলোচনায় আসে ‘শুনতে কি পাও!’ মুক্তির পর থেকেই ফিকশন নাকি ননফিকশন এই নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত ছিলো ছবিটি। ফরাসি গণগ্রন্থাগার, যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার ছবিটি তাদের সংগ্রহশালায় নিয়েছে। এশিয়ার অন্যতম টেলিভিশন জাপানের এনএইচকে ছবিটির সত্ত্ব কিনে নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক প্রদর্শনী করেছে।
এছাড়া প্যারিসে বিশ্ব যুব সম্মেলন, মিউনিখে জার্মান ফিল্ম মিউজিয়াম, লন্ডনে রয়্যাল আন্থ্রপলজিকাল সোসাইটি আয়োজন করেছে ছবিটির একাধিক বিশেষ প্রদর্শনী।
স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মের নির্মাতাদের মধ্যে এই সময়ের অন্যতম নাম কামার আহমাদ সাইমন। জানা-শোনা ফরম্যাটের বাইরে এক নতুন চলচ্চিত্র-ভাষা নিয়ে হাজির হয়েছেন একাধারে পরিচালক, চিত্রগ্রাহক, লেখক এই নির্মাতা। পুরান ঢাকায় জন্ম নেওয়া এই নির্মাতার শৈশব কেটেছে রক্ষণশীল সামাজিক কাঠামোর মধ্যে দিয়ে।
চলচ্চিত্র জীবনের শুরুতেই আমন্ত্রণ পেয়েছেন কান-বার্লিন-লোকার্নোর মতো প্রথম সারির আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোয়, বাংলাদেশের একমাত্র নির্মাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন পিয়াতজা গ্রান্দার মতো বিশ্ব চলচ্চিত্র মঞ্চে।
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির প্রতীক্ষায় আছে কামারের নতুন চলচ্চিত্র ‘নীল মুকুট’। মুক্তির আগেই সিনেমাটির পোস্টার প্রশংসা পায় সর্বমহলে। ঘোষণা ছিলো কোন উৎসবে পাঠানোর আগে দেশেই প্রথম মুক্তি দিবেন ‘নীল মুকুট’। কিন্তু, করোনা মহামারীর কারণে মুক্তি স্থগিত হয়ে যায় আনকাট সেন্সর পাওয়া ছবিটি।
এছাড়াও তার ‘শিকলবাহা’ এখন আছে সম্পাদনার টেবিলে। দুইবার বার্লিনালের ওয়ার্ল্ড সিনেমা ফান্ড (ডব্লিউসিএফ) বিজয়ী ‘শিকলবাহা’র যৌথ প্রযোজনায় আছে জার্মানীর ওয়াইডম্যান ব্রস। গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী চলচ্চিত্র ম্যাগাজিন ভ্যারাইটির শীর্ষ বাছাই ১০ প্রযোজক তালিকায় স্থান পেয়েছিলো ওয়াইডাম্যান ব্রস। বাংলাদেশ সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ছবিটিতে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বরেণ্য অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।
বিজয় দিবসে ‘শুনতে কি পাও!’ এর প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত পাওয়া জানতে ক্লিক করুন: