চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাসাবাড়িতে বুয়া সেজে দুর্ধর্ষ চুরি

পরিকল্পনা অনুযায়ী টার্গেটকৃত বাসায় কাজের বুয়া হিসেবে মহিলা সদস্যদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতো দুর্ধর্ষ চোর চক্র। এরপর সুবিধামতো ওই বুয়া খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে বাসার লোকজনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করে পালিয়ে যায়।

শনিবার রাতে রাজধানীর জুরাইন, তাঁতিবাজার ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমনই চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করে গেন্ডারিয়া থানা পুলিশ।

আটকরা হলো: বিউটি বেগম ওরফে ময়না ওরফে জান্নাতের মা, খোরশেদ আলম ওরফে মোরশেদ, আশাদুল ইসলাম, রিপনা বেগম ও ফারুক আহম্মেদ।

এসময় তাদের কাছ থেকে স্বর্ণের ১ জোড়া হাতের চুরি, একটি লকেটসহ স্বর্ণের চেইন ও নগদ ৩০ হাজার টাকা, ৬টি চেতনানাশক ট্যাবলেট ও ব্যবহৃত মোবাইল জব্দ করা হয়।

রোববার দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির ওয়ারি বিভাগের উপ-কমিশনার(ডিসি) ইফতেখার আহমেদ।

তিনি বলেন: রাজধানীর গেন্ডারিয়ার একটি বাসার গৃহবধু ফয়জুন্নেছা দারোয়ানের মাধ্যমে গত ৯ মার্চ কাজের বুয়া হিসেবে ময়না নামে একজনকে নিয়োগ দেন। কিন্তু পরের দিনই দুপুর দেড়টার দিকে দুপুরের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে সবাইকে অজ্ঞান করে ওই কাজের বুয়া। এরপর নগদ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায় সে।

তিনি বলেন: আটক খুরশেদ আলম সুকৌশলে তার স্ত্রী ময়নাকে ভিকটিম ফয়জুন্নেছার বাসার কাজের বুয়া হিসেবে পাঠায়। আর আটক আশাদুল ও তার স্ত্রী রিপনা বেগম চুরির উদ্দেশে ময়নাকে চেতনানাশক ওষুধ সরবরাহ করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজের বুয়া ময়না দুপুরের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ালে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর আলমারিতে রাখা ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি বিভিন্ন স্বর্ণালংকার টাকা নিয়ে যায় সে। চোরাইকৃত মালামাল স্বর্ণের দোকানদার আটক ফারুক আহম্মেদের কাছে বিক্রি করা হয়।

ডিসি বলেন: চেতনানাশক ওষুধের তীব্রতায় অজ্ঞান ওই পরিবারের তিন সদস্যের সবাইকে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের সন্দেহমূলক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রথমে কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া থেকে কাজের বুয়া ময়নাকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের আটক করা হয়।

তিনি আরও বলেন: ২০১৩ সালে একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে খোরশেদ-ময়না ও আশাদুল-রিপনা দম্পতির পরিচয় হয়। তখন থেকে তারা সংঘবদ্ধভাবে ঢাকা ও রাজশাহীতে এই কৌশলে স্ত্রীদের বাসায় কাজের বুয়া হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চুরির করে আসছিল। ময়না বুয়া সেজে চুরি করে ধরা পড়ার সময়ের মধ্যে রিপনা-আশাদুল দম্পতি আরেক জায়গা আরেকটি চুরির ঘটনা ঘটায়। যে ঘটনায় একজন ভিকটিম এখনো আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।

বাসায় লোক সংখ্যা কম, শিক্ষিত ও সরল, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ কম এমন গৃহকর্তীদের টার্গেট করতো এই চক্রটি। এরপর কাজের বুয়া সেজে বাসায় ঢুকে চুরি করে। কিন্তু চেতনানাশক ওষুধের প্রায়োগিক জ্ঞান না থাকার কারণে তাদের কুটকৌশলের কারণে অনেক ভুক্তভোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

ডিসি ইফতেখার বলেন: বাসায় কাজের বুয়া নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্য নিন, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি রাখুন, প্রয়োজনে বুয়ার বাড়ির নাম্বারও রেখে দিন। সন্দেহজনক হলে পুলিশকে জানান। পুলিশ সার্বিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।