বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ১৭ মার্চ। এ উপলক্ষে বছর ব্যাপী বিভিন্ন আয়োজন করেছে চ্যানেল আই। তারমধ্যে একটি ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’। জামাল রেজার প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও উপস্থাপনা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর। তিনি জানান, চ্যানেল আইয়ের পর্দায় ১৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উঠে আসবে অজানা বঙ্গবন্ধু।
শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শুরু হওয়া ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ প্রচার হবে বছর ব্যাপী। যেখানে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, ব্যক্তি, পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠজনরা অতিথি হিসেবে এসে কথা বলবেন বিভিন্ন অজানা বিষয়। নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যেগুলো আগেই কখনই প্রচার হয়নি সেগুলোই উঠে আসবে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’-এ।
সাধারণ মানুষের গল্প এবং চেতনায় শেখ মুজিবকে তুলে ধরার প্রয়াসেই ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ প্রচারের আগে রবিবার দুপুরে চ্যানেল আইতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম।
এ সময় ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, চ্যানেল আইয়ের পর্দায় ‘মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিন’ নামক একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। ওই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাঙালিরা পছন্দ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও অনুষ্ঠানটি নিয়মিত দেখতেন। কিভাবে আরও ভালো করা যায় সেই পরামর্শ দিয়েছিলেন আমাকে এবং বাচ্চুকে। সেভাবে আমরা ব্যবস্থাও নিয়েছিলেন।
চ্যানেল আইতে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ বাচ্চুর নতুন আয়োজন। মুজিব শতবর্ষের দিন থেকে বছর ব্যাপী অনুষ্ঠানটি চলবে উল্লেখ করে ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, বাচ্চুর সাথে তার টিম এবং চ্যানেল আইয়ের টিম এমন কিছু মানুষকে খুঁজে বের করেছে এবং তাদের কাছে মুজিব সম্পর্কে অজানা জানার চেষ্টা করেছে যেটি নতুন প্রজন্মের কেউই হয়তো জানেনা। এছাড়া মুজিব বর্ষ উদযাপনে চ্যানেল আইতে বিভিন্ন চমক থাকছে। এটা আমাদের জন্য আনন্দের এবং সৌভাগ্যের।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে আমরা লালন ও ধারণ করি লিপিবদ্ধ ইতিহাস থেকে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিপিবদ্ধ হয়নি যে ইতিহাস, অনেক মানুষের মনে, মাথায় তাকে নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে; সেই স্মৃতিগুলো যখন চ্যানেল আইয়ের পর্দায় তুলে ধরবো, তখন একজন ভিন্ন মুজিব আমরা খুঁজে পাবো। একেবারেই একজন মানুষ মুজিব। হাটে বাজারে, স্কুল-কলেজ, মহল্লায় অনেক মানুষ আছেন যাদের স্পর্শ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তারা কথাগুলো কখনই বলেন নাই। যেমন বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার পড়ে থাকা মৃতদেহ যিনি ক্যামেরায় ধারণ করেন তার নাম জিয়া। তিনি আর বেঁচে নেই।
সাথে ছিলেন বিটিভির তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার মুস্তফা মনোয়ার। আমরা তাকে ডেকে জেনেছি ওই সময়ে তিনি কেমন দেখেছিলেন। তার মুখে একটি অনুষ্ঠানে সেই ভয়াবহ বর্ণনা পাওয়া যাবে একটি অনুষ্ঠানে। এমন সব মানুষের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেছি অজানা মুজিবকে। পারিবারিক মুজিব, সংগীত, কবিতা প্রেমী মুজিব, রাজনৈতিক মুজিব সবকিছুই থাকবে। যেগুলো বইয়ের পাতায় পাওয়া যাবেনা। জাতির পিতার জন্য তার জন্ম শতবর্ষে এটাই সবচেয়ে বড় ট্রিবিউট হতে পারে।
হাসান ইমাম বলেন, যতদিন বাংলা থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু আমাদের মধ্যে অমর থাকবেন। দর্শক অনুষ্ঠানটির যথার্থতা খুঁজে পাবে আমি বিশ্বাস করি।
‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ছাড়াও শেখ মুজিবের জন্ম শতবার্ষিকীতে ঐক্য পাঠক সমাবেশ থেকে জাতির পিতাকে নিয়ে লেখা বই পরিচিতি, স্ব-রচিত কবিতা পাঠ, শাইখ সিরাজের পরিচালনায় বিশেষ অনুষ্ঠান, মুজিব বর্ষের প্রথম প্রহরে রাজু আলিমের প্রযোজনায় ‘বঙ্গবন্ধু থেকে বাংলাদেশ’সহ থাকছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।