শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে দেশগুলো বিনিয়োগ করছে তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে এই বিনিয়োগ আরো বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) এবং বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ২৭তম ইউএস ট্রেড শো বাংলাদেশের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, শিল্পনীতি ২০১৬-এ সব জায়গায় বিশেষ করে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ও সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে, বাণিজ্য ব্যবস্থার উদারীকরণ করা হয়েছে এবং নন-শুল্ক বিধিনিষেধকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। এছাড়া জ্বালানী, অবকাঠামো, যোগাযোগ, কৃষি ব্যবসা, আইসিটি, শিক্ষা, পর্যটন, আবাসনসহ সবখাতে নানা ধরনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
বিনিয়োগের জন্য সব সহায়তা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তারা আমাদের শিল্প খাতে উদ্ভাবনমূলক প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে আসবেন, যাতে আমরা ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে এগিয়ে যেতে পারি।
নূরুল মজিদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ৫২তম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০১৯ সালে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে এবং বাণিজ্য ঘাটতিও ধীরে ধীরে কমে আসছে।
দেশের চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বৈচিত্র্যময় শিল্পখাতে বিদ্যমান বিশাল সম্ভাবনার সন্ধানের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। সেই সঙ্গে রাসায়নিক, প্লাস্টিক, চামড়া, সিরামিক, অটোমোবাইল, খাদ্য এবং অন্যান্য অনেক শিল্প স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্য পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান।
ইউএস ট্রেড শো দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জোয়ানে ওয়েগনার অনুষ্ঠানে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাস করে, যাতে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হয়।
তিনি বলেন, অগ্রসরমান বাংলাদেশের সঙ্গে মিলে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তারা সম্ভাবনার বিস্তার ঘটাচ্ছে, তা এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, বিডা’র নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
আয়োজক সংগঠন অ্যামচেম জানায়, এই ট্রেড শো’তে ৮০টি বুথে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া পণ্য ও সেবা প্রদর্শনীর পাশাপাশি এ আয়োজনের ২য় দিনে ‘যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষা’ ও ‘যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য’ এবং ৩য় দিনে ইউএসএইডের কর্মকাণ্ড ও ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ভিশন’ নিয়ে মোট ৪টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
৩ দিনব্যাপী এই শো চলবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা চলবে। এতে প্রবেশ ফি ৩০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রি করা হয়েছে।