শতশত মিলিয়নে ফুটবলার কেনা-বেচার ব্যাপারটা এখন এতটাই নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা। ক্লাবগুলো যাতে ইচ্ছেমত দামে খেলোয়াড় দলে টানতে না পারে সেজন্য আগামী মৌসুম থেকে কড়াকড়ি আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
সংবাদমাধ্যম লা প্যারিসিয়ান জানাচ্ছে, ‘ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে-২’ নামের একটি আইন খুব শীঘ্রই কার্যকর করার ইচ্ছা উয়েফার। তাতে খেলোয়াড় কেনা-বেচায় সর্বোচ্চ ১০০ মিলিয়ন তফাৎ রাখতে হবে প্রতিটি দলকে।
বিষয়টি খোলাসা করা যাক। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না করলেও ধারণা করা হচ্ছে কেবল নেইমার ও কাইলিয়ান এমবাপেকে কিনতেই ৪২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে পিএসজি। উয়েফার নতুন নিয়ম মানলে সামনের মৌসুমে মোট ৩২০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের খেলোয়াড় বিক্রি করতে হবে ফরাসি দলটিকে। তাহলেই ১০০ মিলিয়নের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে ফ্রেঞ্চ জায়ান্টরা। নচেৎ, পড়তে হবে আর্থিক ফেয়ার প্লের খড়গে।
একই নিয়ম খাটে বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও। চলতি মৌসুমের গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন দলবদলে মোট ৩০২ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে কাতালান ক্লাবটি। কেবল ফিলিপে কৌতিনহোর পেছনে ১৬০ মিলিয়ন ও উসমানে ডেম্বেলের জন্য খরচ ১০৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে তারা। গুঞ্জন, সামনের মৌসুমে ১০০ মিলিয়নে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে ন্যু ক্যাম্পে আসতে পারেন অ্যান্থনি গ্রিজম্যান।
এমন ঘটলে বার্সার খরচ গিয়ে দাঁড়াবে ৪০২ মিলিয়ন ইউরোতে। ফেয়ার প্লের ভারসাম্য আনতে দলটিকে বিক্রি করতে হবে ৩০২ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের খেলোয়াড়। অবশ্য ২২২ মিলিয়নে নেইমারকে পিএসজিতে যেতে দিয়ে চাপ কমিয়ে রেখেছে দলটি। কিন্তু এরপরও ৮০ মিলিয়নের চাপ ঝুলেই থাকবে স্প্যানিশ জায়ান্টদের উপর।
ফেয়ার প্লের পাশাপাশি শক্তিরও ভারসাম্য আনতে চায় উয়েফা। বড় বড় দলগুলো যাতে বেশি মাত্রায় খেলোয়াড় ধরে না রাখতে পারে সেজন্য সর্বোচ্চ ২৫ জন খেলোয়াড় দলে রাখার আইন করতে চায় সংস্থাটি। চেলসি-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মত দলগুলো ৬০ জনের বেশি খেলোয়াড় নিজেদের করায়াত্ব করে রেখেছে। অন্যদিকে ছোট দলগুলো ভোগে মানসম্মত খেলোয়াড়ের অভাবে। তাই উয়েফার এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে।
তবে চাইলেই উয়েফা একতরফাভাবে আইন প্রণয়ন করতে পারছে এমনটিও নয়। সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে ২৪ মে সংস্থাটির নির্বাহী কমিটির সভার। সেখানেই ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে ‘ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে-২’ আলোর মুখ দেখবে কী না।