চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রচুর আমেও লাভ নেই চাষী-ব্যবসায়ীদের

সারাদেশের বাজারে আমের ব্যাপক সমারোহ থাকলেও এবার কাঙ্খিত দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চাষী, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এই লোকসানের পেছনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপকে আংশিক দায়ী করছেন তারা। তবে আমে এবার ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিক ব্যবহার হয়নি বলে জোর দাবি তাদের।

গতবছর ফলের রাজা আম নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় ছিলো। নিরাপদে মানুষ খেতে পারেনি প্রিয় ফল। আবার ফরমালিন ব্যবহারের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত শত শত টন আম নষ্ট করায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ী। এবার সেই অবস্থার অবসানে আমপ্রধান এলাকাগুলোতে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় বাগান থেকে আম পাড়ার তারিখ। চাষী এবং বাগান মালিকরা বলেছেন, এতে চরম লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।

তারিখ বেঁধে দেওয়ায় ক্ষতির কথা উল্লেখ করে একজন কৃষক বলেন, আগে আমার যে গাছে আম হতো ১০ মণ এখন হবে পাঁচ মণ। সরকারের বাধা দেওয়ার কারণে আমার পাঁচ মণ আম ক্ষতি হলো।

দেশের সবচেয়ে বড় আমের আড়ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের ব্যবসায়ীরাও আমে লোকসানের কথা জানান। তারা বলেন, তারিখ বেঁধে দেওয়ার কারণে সব আম মোকামে একসঙ্গে জড়ো হচ্ছে। যার ফলে আমের চাহিদা কমে গেছে।

একজন কৃষক বলেন, গেলোবার যে দাম ছিলো, এবার তার অর্ধেক দামও পাচ্ছেন না। তবে চাষীরা বলেছেন, কোনোভাবেই এবার আমে ফরমালিন ব্যবহার করেন নি। আরেকজন কৃষক বলেন, আমরা যারা কৃষক তারা কখনোই ফরমালিন দেই না। এটা আমরা চিনিও না।

কৃষকের অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনও তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্যান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এই সিদ্ধান্ত একবারে হয়নি। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল যাতে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্যই সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ল্যাংড়া আম ১৫ জুনের আগে পাকে না। এর আগে আম পাড়া মানেই অপরিপক্ক আম পাড়া। অপরিপক্ক আমটা যাতে না পাড়ে সেজন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, আমের বাণিজ্যিক গুরুত্ব এবং জাত বিবেচনা করে তবেই যে কোনো উদ্যোগ নেওয়া উচিত। গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, যারা আম ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন তাদের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে আম চাষীদের একটা সমন্বয় হওয়া দরকার।

বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীসহ সবার দাবি আম পাড়ার একটা নির্ধারিত তারিখ ঠিক করে দেওয়ার ফলে তারা এই ক্ষতি সম্মুখীন। যে ক্ষতি সহজে কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়।