একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর নিয়ে পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের একদিন পরই যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে
তুরস্কের মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ ধরনের প্রতিক্রিয়া
একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বলেও সাফ
জানিয়ে দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার ঢাকায় তুর্কি দূতাবাসে দেয়া এক চিঠিতে বলা হয়, মীর কাসেমের ফাঁসির
পর তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতি অনাকাঙ্ক্ষিত।
আগেরদিন দেয়া তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দুঃখের সঙ্গে জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে দেশটির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, আমরা আবারও জোর দিয়ে বলছি যে, এ পদ্ধতিতে অতীতের ক্ষত সারানো যাবে না এবং আমরা আশা করি, এভাবে ফাঁসি দেয়ার ঘটনা বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের মধ্যে বিভেদ বাড়াবে।
তুরস্কের ওই বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে আজ সোমবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ধরনের প্রতিক্রিয়া একটি সার্বভৌম দেশের নিজস্ব বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।
একইভাবে গতকাল রোববার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় ঢাকায় পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত
হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। মীর কাসেম আলীর
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শোক জানানোর
পর ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠানো হয়।
তাকে হুঁশিয়ার করে জানানো হয়,
একের পর এক এমন কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত আচরণ দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট
করতে পারে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
হওয়ার পর আগের মতোই বিবৃতি দিয়ে একাত্তরে সংঘটিত অপরাধকে ‘কথিত’ উল্লেখ করে
‘ত্রুটিপূর্ণ বিচার’-এর অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রতিবাদে রোববার বিকেলে পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সামিনা
মেহতাবকে ডেকে পাঠান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল আহসান।
তার হাতে তুলে দেওয়া হয় কূটনৈতিক প্রতিবাদপত্র।
শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে
কাশিমপুর কারাগারে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা
হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর
বিরুদ্ধে অপহরণ, গুম, খুন ও নির্যাতনসহ ১৪টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গঠন
করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।