উদ্ধার রোহিঙ্গা শরণার্থী ও অভিবাসন আকাঙ্খী বাংলাদেশীদের সাময়িকভাবে পেনাং প্রদেশের সরকারি ভবন-প্রাঙ্গণে আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া।
তবে উর্ধতন এক পুলিশ কর্মকর্তা সম্প্রতি সনাক্ত মানবপাচারকারীদের ২৮টি ক্যাম্প পরিদর্শন করে শিউরে উঠার মতো অমানবিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। এমনকি অভিবাসন আকাঙ্খী বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গাদের পশুর মতো খাঁচায় আটকে রাখার প্রমাণের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলে থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে অভিবাসন আকাঙ্খীদের দুর্দশার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মানবপাচারকারীদের ২৮টি ক্যাম্প। সেখানেই গত ১১ মে থেকে ২৩ মে’র মধ্যে ১৩৯টি কবরের সন্ধান পায় মালয়েশিয় পুলিশ। কবরগুলোতে দেড়শো’রও বেশি মানুষের মৃতদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর মালয়েশিয়ার পার্বত্য জঙ্গলে মানবপাচারকারীদের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোর চিত্রও উন্মোচিত হয়েছে বিশ্বের সামনে।
ক্যাম্পগুলোকে পরিত্যক্ত অবস্থায় খুঁজে পেয়েছে রয়্যাল মালয়েশিয়ান পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, মাত্র ২-৩ সপ্তাহ আগেও এই ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশী অভিবাসন-আকাঙ্খীরা ছিলো।
থাইল্যান্ডে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর দ্রুত পালাতে গিয়ে ক্যাম্পগুলোতে ভারী জিনিসপত্র আর অসুস্থ-মৃতপ্রায় অভিবাসীদেরও ফেলে যায় পাচারকারীরা।
সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া ২৮ টি ক্যাম্প পরিদর্শন করে সেগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন মালয়েশিয় পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা খালিদ আবু বকর।
খালিদের বর্ণনা অনুযায়ি, কাঁটাতারের বেড়া দেয়া চরম নোংরা ক্যাম্পগুলোতে খাঁচাসহ পাচারকারী-জিম্মিকারীদের ফেলে যাওয়া নানা জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সাগর পথে নিয়ে আসা অভিবাসন আকাঙ্খীদের এসব খাঁচায় আটকে রেখে পাহারা দেয়া হতো।
ক্যাম্পগুলোতে সর্বনিম্ন ১০ জন থেকে সর্বোচ্চ ৩’শ জন পর্যন্ত মানুষকে জায়গা দেয়া হতো। বাঁশ-কাঠ আর ত্রিপলের তৈরি পরিত্যক্ত ক্যাম্পগুলোতে জ্বালানি, পানির জার, মরিচের বস্তা, কিছু খাবার এবং ওষুধও পাওয়া গেছে।
থাই-মালয়েশিয়া সীমান্ত সংলগ্ন উত্তর মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার অনলাইন। উত্তর মালয়েশিয়ার পার্বত্য অঞ্চলেই পাচারকারীদের ৮০ শতাংশ ক্যাম্প রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
পুলিশ কর্মকর্তা খালিদ জানিয়েছেন, এই ক্যাম্পগুলো কারা চালাতো তা খুঁজে বের করতে মাঠে নেমেছ মালয়েশিয়া প্রশাসন।