পরিসংখ্যান বদলায়নি। ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে হারের ধারা অব্যাহত পাকিস্তানের। রোববার ওল্ড ট্রাফোর্ডে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে ৮৯ রানে হারের পর ক্ষোভের আগুন জ্বলছে পাকিস্তান ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে। দলকে সমালোচনায় বিদ্ধ করতে ছাড়ছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররাও।
হারের পর অধিনায়ক সরফরাজকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন স্পিডস্টার শোয়েব আখতার। পাকিস্তান অধিনায়কের নেতৃত্বকে ‘মস্তিষ্কহীন’ বলে মন্তব্য রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের। একইসঙ্গে দেশের ক্রিকেট ম্যানেজমেন্টকে ‘অপদার্থ’ বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
টস জিতে সরফরাজের প্রথমে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্ত মোটেই মেনে নিতে পারছেন না শোয়েব। বছর দু’য়েক আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রসঙ্গ টেনে এনে বলছেন, সেবার ফাইনালে টস জিতে যে ভুলটা করেছিলেন ভারত অধিনায়ক কোহলি, একই ভুল এদিন করেছেন সরফরাজ। শুধু অধিনায়ককে নয়, শোয়েবের খোঁচা থেকে বাদ যাননি দলের বোলাররাও।
শোয়েবের পথে হেঁটেছেন তার বোলিং গুরু ওয়াসিম আকরামও। পাকিস্তান দলকে পরামর্শ দিতে দিতে তিনি ক্লান্ত বলেই জানিয়েছেন ‘সুইং সুলতান’। ম্যাচে পাঁচজন বোলার নিয়ে নামলেও টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সমালোচনা করেছেন তিনি।
আকরাম বলেছেন, ‘আপনি যখন পাঁচজন বোলার নিয়ে নামবেন, তখন ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলারদেরই শক্তি হিসেবে মানবেন। যখন মনে করবেন বোলিংই আপনার শক্তি, তখন তো অবশ্যই রান ডিফেন্স করবেন। আগের দুই ম্যাচ থেকেই আমি এটা বলে আসছি, কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত।’
ল্যাঙ্কাশায়ারে খেলার কারণে সেখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা আছে আকরামের। তারপরও এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তার কাছে কেউ পরামর্শের জন্য যাননি বলে আক্ষেপ করেছেন, ‘আমি এখানে (ম্যানচেস্টার) আছি, এখানে আমি খেলেছি। খেলোয়াড়দের পরামর্শ দিতে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু কেউই আমার কাছে আসেনি। এমনকি পুরো টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত শাহিন শাহ আফ্রিদি ছাড়া কেউই আসেনি।’
গ্রুপ পর্বে আর চারটি ম্যাচ বাকি রয়েছে পাকিস্তানের। এখান থেকে আর একটি ম্যাচ হারলেই বিদায় নিশ্চিত। যদিও এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নিয়ে আর কোনো আশা দেখছেন না আকরাম, ‘আমি মানুষকে হতাশ করতে চাই না। কিন্তু টুর্নামেন্টে আমি পাকিস্তানের কোনো সুযোগ দেখি না।’
বোলারদের একহাত নিয়ে অন্যদিকে শোয়েব বলেছেন, পরিকল্পনাহীন বোলিং, সেইসঙ্গে অনিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে দলকে ডুবিয়েছে বোলাররা। সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন সবচেয়ে সফল বোলার মোহাম্মদ আমিরকেও। তার মতে, তিন উইকেট নিলেও আমির কখনোই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারেননি।
পরের ম্যাচে আগামী ২৩ জুন লর্ডসে সাউথ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ১৯৯২ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।