৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। বাংলাদেশের মূল ভুখণ্ডে যোগ হয়েছে ভারতের ১১১টি ছিটমহল। আর ভারতের মূল ভূখণ্ডে যোগ হলো বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল।
শনিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ ভূখণ্ডগুলোর দায়িত্বগ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে উড়ানো হয়েছে জাতীয় পতাকা। এরপর তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মূল ভূ-খণ্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করে নেয় বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতের ছিটমহলের নাগরিকরা। পূর্ণতা পেয়েছে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি। ইতিহাসের এক নতুন যাত্রা। বদলে গেছে পতাকা আর মানচিত্র।
অন্ধকার জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাঝরাতে আলোর মিছিল বের করে বাংলাদেশের নতুন এই নাগরিকরা। তাদের একজন বলেন, এখন আমরা সত্যি আনন্দে মুখরিত। এখন আমরা পরিপূর্ণভাবে স্বাধীন। স্বাধীন বাংলার সাথে আমরা মিশে গেছি।
ভোরের আলো ফোটার সাথেই বাংলাদেশের নতুন নাগরিক আর নতুন ভুখণ্ডের দায়িত্ব বুঝে নেয় স্থানীয় প্রশাসন। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। প্রথমবারের মতো জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বাংলাদেশের পতাকাকে সম্মান জানায় নতুন এই নাগরিকরা।
পরে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। লালমনিরহাটের পাটগ্রামের উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল বলেন, আজকে থেকে এই জায়গাটি বাংলাদেশের মুল ভূখণ্ডের সাথে একাকিভূত হয়ে গেছে। আজকে যেটি বাংলাদেশ এই বাংলাদেশে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পতাকা উত্তোলন করেছি।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর কুতুব উল আলম বলেন, ওনাদেরকে আর ছিটমহলবাসি বলার সুযোগ নেই, ওনারা আমাদের দেশের অনান্য নাগরিকদের মতই সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে।
এ দেশের মাটি আর মানুষের সহযাত্রী হতে পেরে তৃপ্তির হাসি ৬৮ বছর বঞ্চিত জীবন যাপন করা এ মানুষগুলোর।
একজন ছিটমহলবাসী বলেন, আমরা বাংলাদের সাথে জড়িত হয়ে গেলাম তাই আজ আমাদের খুশির দিন। আর একজন ছিটমহলবাসী বলেন, আজ আমাদের দেশ স্বাধীন হল এতদিন অন্ধকারে পড়ে ছিলাম। আজ আমাদের আনন্দের দিন।
নতুন এই সকালে এলাকার প্রতিটি বাড়িতে এখন ওড়ছে জাতীয় পতাকা।