সৌদি আরবের প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর থেকে গত চারদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তুরস্ক কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, তাকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে।
তুর্কি সরকারের সংশ্লিষ্ট দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা শনিবার সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তারা বলেন, ‘তুর্কি পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, খাশোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত এবং পরে কোনো এক সময় মৃতদেহটি কনস্যুলেট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’
অবশ্য হত্যাকাণ্ডটি কীভাবে ঘটানো হয়েছে সেটি সম্পর্কে নিজেদের কোনো ধারণার কথা জানাননি এই কর্মকর্তা।
সৌদি কনস্যুলেটের একটি সূত্র অবশ্য তুরস্কের এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। ওই সূত্রের দেয়া বিবৃতিতে অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করা হয়েছে।
ওই সূত্র জানায়, সৌদি তদন্তকারীসহ ১৫ সদস্যের একটি নিরাপত্তা দল খাশোগির অন্তর্ধান তদন্তে যোগ দিতে শনিবারই ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে।
এর আগে সৌদি কনসাল-জেনারেল শনিবার বলেছিলেন, তার দেশ খাশোগির সন্ধানকাজে তুরস্ককে সহায়তা করে যাচ্ছে। তবে খাশোগির অপহরণের সম্ভাবনা নিয়ে কোনো ধরনের কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
জামাল খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় নানা নীতির সমালোচনা করায় তিনি আশঙ্কায় ছিলেন, সৌদি সরকার এর প্রতিশোধ নেবে। তাই গত এক বছর ধরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ওয়াশিংটনে ছিলেন তিনি।
আসন্ন বিয়ে উপলক্ষে তুর্কি বাগদত্তাকে নিয়ে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে গত মঙ্গলবার তিনি যান বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে।
তার বাগদত্তা জানান, তাকে বাইরে অপেক্ষায় রেখে খাশোগি মঙ্গলবার দুপুরে কনস্যুলেটের ভেতরে ঢোকেন। তারপর আর বের হননি তিনি।
এরপর থেকেই তুর্কি এবং সৌদি পক্ষ এই সাংবাদিকের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। একদিকে আঙ্কারা বলছে, সৌদি কূটনৈতিক মিশন থেকে খাশোগির বের হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। অন্যদিকে রিয়াদের দাবি, ওইদিনই কিছুক্ষণ পর কনস্যুলেট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আরও বিস্তারিত তথ্য খুঁজছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ। ‘আমরা এখনো কোনো দাবিই নিশ্চিত করার মতো অবস্থানে নেই। তবে আমরা খুবই নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি,’ জানান পররাষ্ট্র বিভাগের এক কর্মকর্তা।