“ছোটবেলায় ঘরের চাল চুরি করে বিক্রি করার অর্থ দিয়ে নায়করাজ রাজ্জাকের সিনেমা দেখতাম। কারণ ছোটবেলায় পরিবার থেকে সিনেমা দেখা নিষেধ ছিল। মাঝেমধ্যে সুযোগ পেলেও হাতে টাকা পয়সা থাকত না। রাজ্জাকের কোনো ছবি মুক্তি পেলে তা দেখার লোভ সামলাতে পারতাম না। আজকে নায়ক রাজ্জাকের মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রের মৃত্যু হয়েছে।” কথাগুলো বলছিলেন মো.মতিন মিয়া, সিএনজি অটোরিকশা চালক। তার গ্রামের বাড়ি খাগরাছড়ির দীঘিনালায়। গত পাঁচ বছর যাবত তিনি ঢাকা শহরে সিএনজি চালান।
গত সোমবার সন্ধ্যায় নায়করাজ রাজ্জাকের ইন্তেকালের পর রাত ৮টার দিকে তেজগাঁও থেকে শাহবাগে আসার উদ্দেশ্যে তার সিএনজি অটো রিকশায় ওঠে বসি। এরপর রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর জানার পর খুব কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলেন মতিন মিয়া।
তিনি বলেন, ঘরের চাল বিক্রি করে বন্ধুরা মিলে দীঘিনালার পাহাড়িকা সিনেমা হলে চলে যেতাম। সেখানে গিয়ে দেখতাম সিনেমা হলে বাঙালীদের চেয়ে পাহাড়ীদের ভিড় অনেক বেশি।
নায়ক রাজ্জাকের মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। আলাপচারিতার একপর্যায়ে মতিন মিয়া বলেন, সালমান শাহর মৃত্যুর পর সিনেমা দেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েছি।
বাংলা সিনেমা বর্তমানে না দেখার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন ভালো সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেখছি দেশে সিনেমা হলের সংখ্যাও কমছে। আমার এলাকার সেই পাহাড়িকা সিনেমা হল এখন আর নেই। তাছাড়া আমার জানা মতে গত কয়েক বছরে শুধু ঢাকা শহরেই প্রায় একশ’র মতো সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে।’