চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নতুন ছবি নেই, রাজধানীর প্রেক্ষাগৃহে তাই অশ্লীল ছবি!

রমজান মাসে সারাদেশের বেশিরভাগ সিনেমা হল বন্ধ থাকে। ঈদের আগে হলের কর্মচারীদের হাতে কিছু তুলে দেয়ার আশায় রমজান মাসেও কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহের মালিক সিনেমা প্রদর্শন অব্যাহত রাখেন। কিন্তু নতুন ছবি না থাকার দোহাই দিয়ে অনেকেই সিনেমা হলে দেখাচ্ছেন অশ্লীলতায় অভিযুক্ত একাধিক ছবি! যে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন প্রদর্শক সমিতির নেতারা।

সোমবার (২০ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র ফার্মগেটের ছন্দ সিনেমা হলে প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীল ও কাটপিসে ভরপুর সিনেমা ‘দুর্ধর্ষ দুর্জয়’।

শুধু তাই নয়, রুবেল, ময়ূরী, শাকিবা, মেহেদী অভিনীত এ ছবির অশ্লীল পোস্টারে সাঁটানো ছন্দ সিনেমা হলের দেয়াল। হলের ম্যানেজারকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও কথা হয় হলের মূল ফটকে বসে থাকা এক কর্মচারীর সঙ্গে। যিনি প্রায় ১২ বছর ধরে ছন্দ সিনেমার হলে চাকরী করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানালেন, নতুন ছবি নেই তো। তাই এসব অশ্লীল ছবি চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ বছর যেসব ছবি রিলিজ হয়েছে একটিও ভালো চলেনি। ওসব ছবির চেয়ে অশ্লীল ছবি চলছে দেখে কিছু লোক আসে। তবে রমজানে দর্শকের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তিনি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২ টার শোতে ১৫ জন দর্শক হয়েছে। কেন অশ্লীল ছবি চালানো হচ্ছে এ ব্যাপারে এর বেশি কিছুই জানেন না বলে জানান।


ফার্মগেটে ছন্দের পাশে আরেক সিনেমা হল আনন্দ। হল দুটি পাশাপাশি। মালিক এক হলেও দুটির মধ্যে রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। দেখা যায়, আনন্দ সিনেমা হলে চলছে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস অভিনীত ‘জান আমার জান’। শাহীন সুমন পরিচালিত এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল ২০০৯। ওই ছবিটি সুপারহিট ব্যবসা করেছিল। এই হলে ঈদের ছবি হিসেবে ‘পাসওয়ার্ড’ প্রদর্শিত হবে জানা যায়।

আনন্দ সিনেমার হলের ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে না। ঈদের আগে হলের স্টাফদের যদি কিছু পয়সা দেয়া যায়, এই আশায় খোলা রাখা হয়েছে হলটি। ম্যানেজার আসেন না গত দুদিন ধরে। তাই কথা হয় টিকেট কাউন্টারে বসে থাকা আজগর আলীর সঙ্গে। তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে আনন্দ সিনেমা হলে কর্মরত। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, ২০১০ সাল পর্যন্ত রমরমা ব্যবসা হতো আনন্দ সিনেমা হলে। এরপর ধস নামে। সিনেমা হলের সামনে অপরিস্কার, হলের ভিতরের নাজুক অবস্থা এসব কারণে মানুষ আর আনন্দতে ছবি দেখতে আসেন না।

তিনি আরো বলেন, মালিকপক্ষও লোকসান খেতে খেতে হাঁপিয়ে গেছে। দেশে যেসব ছবি নির্মাণ হচ্ছে সেগুলো দেখছে না দর্শক। মাঝেমধ্যে শাকিব খানের দু-একটি ছবির মাধ্যমে ব্যবসা চাঙ্গা হয়। এমনকি তখন টিকেট বিক্রি নিয়ে কালো বাজারী হওয়ার ঘটনাও ঘটে। নিকট অতীতে উল্লেখ করার মতো ব্যবসা হয়েছিল ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির মাধ্যমে। এদেশে ছবির ব্যবসা আবার ভালো হবে যদি নতুন ফর্মুলায় ছবি বানানো হয়। নইলে এখন যেসব ছবি হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে শিগগির আনন্দ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে, রমজান মাসেও সিনেমা হলে প্রকাশ্যে অশ্লীল সিনেমা চালানোর ব্যাপারে কিছুই জানেন না বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, সংযমের এ মাসে যারা অশ্লীল ছবি চালাচ্ছে, তারা কাজটি মোটেও ঠিক করছে না। দেশের সিনেমা হলগুলোতে অশ্লীল ছবি যেন না চালায় সেজন্য তথ্যমন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন পাঠানো আছে। আমাদের তেমন কিছু করার নেই। স্থানীয় ডিসি চাইলে সিনেমাহলে অশ্লীল ছবি প্রদর্শন বন্ধ করতে পারবেন।