রাজধানীর গুলশান এলাকায় প্রায় তিন বছর আগে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় রায় দেওয়ার অপেক্ষায় আদালত। রায়কে কেন্দ্র করে আদালত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানের নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে গিয়েও নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায়। সেখানকার প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যাপক সংখ্যক র্যাব-পুলিশের সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও কাজ করছেন।
রাজধানীর নাইটঙ্গেল মোড় থেকে রায় সাহেব বাজার মোড়, সুরিটোলা, ভিক্টোরিয়া পার্ক এবং এর আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সকাল পৌনে ৯টায় মিনিটের দিকে নিরাপত্তার জন্য বহিরাগতদের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে দেয়া হয়। এছাড়াও সকাল থেকে আদালতের প্রবেশপথে ব্যাগ তল্লাশি করে সকলকে ঢোকানো হয়।
এরই মধ্যে রায় শোনানোর জন্য আসামিদেরকে কারাগার থেকে আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়েছে।
আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুরান ঢাকার আদালত পাড়া পরিদর্শন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম ও কৃষ্ণপদ রায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন বলেন: মহানগর দায়রা জজ আদালত বুধবার মামলাটির রায় ঘোষণা করবে। রায় ঘিরে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
আলোচিত এই মামলায় এখন পর্যন্ত ঘটনা সম্পর্কে জানেন কিংবা ঘটনা দেখেছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জানেন এরকম ১১৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ১৭ জন সাক্ষী ঘটনার দিন হলি আর্টিজানের ভেতর অবস্থান করছিলেন। তাদেরকে কমান্ডো বাহিনী, পুলিশ ও র্যাব জীবিত উদ্ধার করে। রায় ঘোষণার দিন ধার্য করার আগে এ মামলার ৭৫টি আলামত আদালত পর্যবেক্ষণ করেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। অস্ত্রের মুখে বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে তারা ২০ জনকে হত্যা করে। তাদের ছোড়া গ্রেনেড ও গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।
পরে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। প্রধান আসামিদের মধ্যে পুলিশের অভিযানে ১৩ জন নিহত হওয়ায় তাদের চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।
ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বিচার শুরু করে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। ২১১ সাক্ষীর মধ্যে আদালতে সাক্ষ্য দেয় ১১৩ জন।
হলি আর্টিজান হামলা মামলায় গ্রেপ্তার ৮ জঙ্গিরা হলো- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধী, রাশেদ ওরফে র্যাশ, রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান, মিজান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশীদ।