চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ধারাবাহিক নৌ দুর্ঘটনায় নদী আর সাগর পাড়ের আর্তনাদ

গত মঙ্গলবার থেকে রোববার এ ছয় দিন ছিল পানগুছি, মেঘনা আর বঙ্গোপসাগরের তীরে হাজারো মানুষের ভিড়। সেখানে স্বজন হারানোর নির্মম বাস্তবতায় অসংখ্য ভয়ার্ত চোখ খুঁজছে এদিক-সেদিক। এক একটি মরদেহ ভেসে উঠার খবরে চাপা কান্না নিয়ে মুখটি দেখতে ছুটে গেছেন তারা। তাদের কেউ কেউ আবার প্রিয়জনের প্রাণহীন দেহ পেয়ে তীব্র চিৎকারে ভারি করে তুলেছেন সেই মৃত্যুপুরীর পরিবেশ। ২৮ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল-এই ছয় দিনে ৩টি ট্রলার ডুবির ঘটনায় মারা গেছে কমপক্ষে ৪০ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছে আরও প্রায় ২০ জন। বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে পানগুছি নদীতে ২৮ মার্চ ৮০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৫ দিনের উদ্ধার অভিযানে ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়। এর একদিন পর ৩০ মার্চ ৯০ জন যাত্রী নিয়ে চাঁদপুরের সোলেমান শাহ’র (লেংটা) মেলায় যাওয়ার পথে চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা নদীতে ডুবে যায় অারেকটি ট্রলার। এই ঘটনায় ১৬ জনের লাশ উদ্ধার হয়। সর্বশেষ ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে একটি সি-ট্রাক থেকে ৫১ জন যাত্রীকে তীরে আনতে গিয়ে ডুবে যায় আরেকটি ট্রলার। এ ঘটনার পর সেখানে ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় যারা নিখোঁজ রয়েছে; তারা সবাই মারা গেছে বলে ধারণা করছে উদ্ধারকারীরা। আমরা দেখেছি; প্রতিবছরই চৈত্র মাসের শেষে দিকে এবং পুরো বৈশাখ মাসের প্রায় প্রতিদিনই এমন ট্রলার অথবা নৌকা ডুবির ঘটনা গণমাধমে আসে। দেখা যায় এসব ঘটনার বেশির ভাগই ঘটেছে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কারণে। এছাড়া এসব ট্রলারে আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত পাওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকাও অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিবছর এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলেও তা বন্ধের কোন উদ্যোগ আমরা দেখি না। এক্ষেত্রে এক রকম অবহেলা এবং উদাসীনতা দেখা যায়। যার শিকার হয় অসংখ্য নিরীহ মানুষ। প্রিয়জনকে হারানোর আহাজারি নিয়ে সারাজীবন কাটাতে হয় তাদের। আমরা মনেকরি সড়ক দুর্ঘটনার মতোই নৌ দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এখনই তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে নৌপথ আরো বিপদসংকুল হয়ে উঠবে।