চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

৪২ মিলিয়ন ডলার খরচে এ কেমন ঘড়ি বানাচ্ছেন অ্যামাজন প্রধান?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি দুর্গম পর্বতে একটি ঘড়ি নির্মাণ করছেন অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস। ৪২ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এ যান্ত্রিক ঘড়িটি কিন্তু সময় দেখার সাধারণ কোনো ঘড়ি নয়।

এটি এমন একটি ঘড়ি যা আগামী ১০ হাজার বছরের কথা মাথায় রেখে বানানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এক টুইটে ঘড়িটির নির্মাণ কাজ শুরুর ঘোষণা দেন অ্যামাজনের প্রধান। এর সঙ্গে এক মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন বেজোস যেখানে নির্মাণ কাজের অংশ বিশেষ তুলে ধরা হয়েছে।

আজব এ ঘড়িটির স্বপ্নদ্রষ্টা মূলত কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড্যানি হিলিস। ১৯৮৯ সালে তিনি প্রথম এ ঘড়ি নিয়ে কাজ শুরু করেন। দ্য লং নিউ ফাউন্ডেশন নামে তার প্রতিষ্ঠানও জেফ বেজোসের সাথে এ ঘড়ি তৈরিতে কাজ করছে।

গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ঘড়িটি নিয়ে কাজ করছেন এ দুজন ব্যক্তি। একাধিকবার ঘড়িটির প্রোটোটাইপ তৈরি করা হয়েছে। ড্যানি হিলিস ছাড়া এ প্রকল্পে আরও যুক্ত আছেন মিউজিসিয়ান ব্রায়ান এনো, লেখক কেভিন কেলি ও স্টুয়ার্ট ব্র্যান্ড।

ঘড়িটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অবাক করার মতো। ৫০০ ফুট লম্বা এ ঘড়িতে নেই কোনো সেকেন্ড কিংবা মিনিটের হিসেব। ঘড়িটি সময় হিসেব করবে বছর, শতাব্দী এবং হাজার বছরে।

এতে থাকা পেন্ডুলাম প্রতি এক বছরে একবার নড়বে। এছাড়া আছে শতাব্দীর কাঁটা যা একশো বছরে একবার নড়বে। ঘড়িটির বিশেষ একটি চেম্বারে থাকবে একটি পাখি। এক হাজার বছর পরপর পাখিটি চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসবে এবং জানান দেবে ঘড়িটির হাজার বছর পূর্ণ করেছে। এরপর আবার আরও এক হাজার বছরের প্রতীক্ষায় দিন গুনবে এটি।

এর বাইরে ঘড়িতে থাকবে আরও পাঁচটি অ্যানিভার্সারি চেম্বার। মূলত ঘড়িটির এক বছর, দশ বছর, একশো বছর, এক হাজার বছর এবং দশ হাজার বছর পূর্তি উদযাপনে এসব চেম্বারে থাকবে যান্ত্রিক অ্যানিমেশন। এরই মধ্যে এক বছর পূর্তির অ্যানিমেশনের বিষয়বস্তু চূড়ান্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই চূড়ান্ত হবে দশ বছরের অ্যানিমেশনও। তবে বাকি তিনটি অ্যানিমেশন কী বিষয়ের উপর হবে, তার দায়িত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপরই ছেড়ে দিতে যান বেজোস।

ঘড়িটির বিষয়ে ২০১১ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেজোস জানিয়েছিলেন, ৪২ মিলিয়ন ডলার খরচ করে হয়তো এখন অনেক কিছু করা সম্ভব যা মানুষের কাজে লাগে। কিন্তু কয়েক হাজার বছর পর মানুষ এই ঘড়িটি নিয়ে আলোচনা করবে, এটি নির্মাণের কারণ বের করতে চাইবে। আর সেটিই হলো মূল কথা। এখন যেমন মানুষ পিরামিড কিংবা স্টোনহেঞ্জ নিয়ে কথা বলে, এ ঘড়িটিও তেমনই হবে বলে মনে করেন তিনি।

অ্যামাজনের প্রযুক্তি মানেই যেনো একটু অন্যরকম কিছু, ৪২ মিলিয়ন ডলার খরচে তৈরি এই ঘড়ি হয়তো সেই পথেই হাটছে।