সব ধরণের ক্রিকেটে সাময়িক নিষিদ্ধ হওয়া বাংলাদেশ দলের পেসার তাসকিন আহমেদকে অবৈধ ঘোষণায় নিজের আইন নিজেরাই ভঙ্গ করেছে আইসিসি এমনটাই বলছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি আইনি পরামর্শ চাইতে মুস্তাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি বোলিং অ্যাকশন সম্পর্কিত আইসিসির আইন ঘেঁটে এ ব্যাপারে বিসিবিকে অবহিত করেছেন। এছাড়াও তিনি ফেসবুক পোস্টে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আইসিসির নিয়ম অনুসরণ করলে আর বাংলাদেশের উদীয়মান অন্যতম পেসার তাসকিন আহমেদকে নিষিদ্ধ করার কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু আইসিসি নিজেরাই তাদের তৈরি করা নিয়মই অনুসরণ করেনি।
তিনি আইসিসির এ সম্পর্কিত নিয়ম, তাসকিন ও সানিকে অভিযুক্ত করে দুই আম্পায়ারের দেয়া প্রতিবেদন এবং সর্বশেষ ল্যাব পরীক্ষার ফল ঘেঁটে দেখেছেন – কোনোভাবেই তাসকিন নিষিদ্ধ হতে পারেন না।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
বোলিং অ্যাকশন সম্পর্কিত আইসিসির আইনের ২.২.৬ ধারায় বলা আছে, “ল্যাব পরীক্ষায় বোলাররা নির্দিষ্ট সেসব ডেলিভারিই করে দেখাবেন যে ডেলিভারির জন্য আম্পায়াররা তাকে সন্দেহ করেছেন।” কিন্তু মাঠের দুই আম্পায়ার তাসকিনকে নির্দিষ্ট কোন ডেলিভারির জন্য অভিযুক্ত করেননি।
পরীক্ষায় তাসকিনের স্টক ডেলিভারি ও ইয়র্কারে কোন সমস্যা পাওয়া যায়নি। তাঁর ৯ টি বাউন্সারের মধ্যে ৩ টিতে সমস্যা পাওয়া যায় বলে জানানো হয়েছে। অথচ নেদারল্যান্ডের সাথে ম্যাচে তাসকিন কোনো বাউন্সারই করেন নি।
আইসিসির ২.২.৬ ধারাতেই বলা আছে, “যে ম্যাচে সন্দেহে পড়বেন সেই ম্যাচের করা ডেলিভারির বাইরে অন্য কোনো ডেলিভারি এই পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত নয়”।
তারপরও তাসকিনের বাউন্সারে যদি সমস্যা থেকেও থাকে, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী এসব ক্ষেত্রে বলা আছে স্টক ডেলিভারির বাইরে অন্য ডেলিভারির জন্য বোলারকে সতর্ক করে দেয়াই সর্বোচ্চ ব্যবস্থা। সতর্ক করে দেয়ার পর যদি বোলার পরে আর কোন ম্যাচে এমন ভুল করেন তবেই ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে মাঠের দুই আম্পায়ারের সন্দেহ থেকে শুরু করে ল্যাব পরীক্ষার পর নেয়া কোনো সিদ্ধান্তেই ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা নিজেদের নিয়ম নিজেরাই অনুসরণ করেনি। এ বিষয়ে ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান বিসিবিকে পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন, ২.৩.১ এর ধারা অনুযায়ী সুইজারল্যান্ডের ক্রীড়া আদালতে তারা আপিল করতে পারে।
শনিবার বিকেলে বাংলাদেশের দুই বোলার তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানির বোলিং নিষিদ্ধ করে নিজেদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আইসিসি। আইসিস তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, চেন্নাই ল্যাবে বোলিং পরীক্ষা দিয়ে উতরাতে না পারায় এই দুই বোলারকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সাময়িক ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আইসিসি তাদের প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা দিয়ে বলে, “আরাফাত সানির বেশিরভাগ বলে কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকে”তাসকিন সম্পর্কে বলা হয়, “তাসকিনের সব বল বৈধ নয়”।
গত ১৪ মার্চ চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সানির বায়ো-মেকানিক্যাল টেস্ট নেয়া হয়। পরদিন পরীক্ষা দেন তাসকিন আহমেদ।
বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ। জয় পাওয়া ওই ম্যাচের পর তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানির বিরুদ্ধে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ আনেন দুই আম্পায়ার।