ব্যস্ত রাজধানীতে চলতে চলতে ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে মালিবাগ ফ্লাইওভারের নিচে আটকা পড়া ট্রেনটিকে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর কমলাপুর রেল স্টেশনে ফিরে নেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা ও কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বড় ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি।
দুপুর আড়াইটার পর অন্য একটি ইঞ্জিন এসে ট্রেনটিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
চট্টগ্রামে উদ্দেশে কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টলা-৬৮ নামের ট্রেনটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝরাস্তায় মালিবাগ ফ্লাইওভারের নিচে আটকে পড়ে। দীর্ঘ দেড় ঘন্টা যাবৎ ট্রেনটি রাস্তার মাঝখানে আটকে থাকায় মালিবাগ মোড়, মৌচাক শান্তিনগর চৌধুরী পাড়া এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
ট্রেনটির কৌশলি চালক সক্ষমতার সাথে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ যাত্রীদের বলায়, যাত্রীরা বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হয়। ফলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান ট্রেনটির চালক জামাল আহমেদ।
হঠাৎ রাস্তায় ট্রেন বন্ধ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জামাল আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ইঞ্জিনের কুলার ফ্যান গরম হয়ে গেছে। তাই ফ্যানও বন্ধ হয়ে গেছে। লালবাতি জ্বলে উঠায় ট্রেনটি তাৎক্ষণিক থামাতে হয়েছে। হয়তো ফ্যানের কয়েল নষ্ট হয়ে গেছে, তাই ফ্যান বন্ধ হয়ে গেছে বলে ধারণা করেন তিনি।
স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার আগে ইঞ্জিন চেক করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব ঠিকঠাক আছে- দায়িত্বরতগণ এমনটি জানানোর পরই ট্রেন ছাড়া হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ বিকল হয়ে গেলে তো কারো কিছু করার নাই। বিকল হয়ে যাওয়ার পর পরই নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানানো হয়েছে বলে জানান ট্রেনের চালক জালাল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ট্রেনের চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১টা ৮ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয় চট্টলা-৬৮ নামের ট্রেনটি। ১ টা ১৮মিনিটে ট্রেনটি মালিবাগ রেলগেটে আসার পর হঠাৎ ইঞ্জিনের কুলার ফ্যান বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গরম হয়ে যায় পুরো ইঞ্জিন। এরপর সেখানে ইঞ্জিন থেকে রাস্তায় তেল ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এ কারণে মালিবাগ মোড় থেকে মালিবাগ চৌধুরী পাড়া সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দুই পাশে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
লোকাল ট্রেনটি রাত ৯টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রামে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্ত রাস্তার মাঝখানে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ওই ট্রেনে থাকা চালকের সহযোগী চালক নজরুল ইসলাম জানান, ভাগ্য ভালো যে, ঢাকার মধ্যেই মূল স্টেশনের কাছে ট্রেনটি বিকল হয়েছে। কারণ স্টেশন থেকে বেশি দূরে কোথাও বিকল হলে আরো বেশি সমস্যা হতো। সময়ও নষ্ট হতো বেশি। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে খবর জানিয়েছি। দ্রুত ট্রেনটি ফিরিয়ে নেয়া হতে পারে।
স্টেশন থেকে ছাড়ার আগে ট্রেনটির ইঞ্জিন চেক করা হয়েছে কি না জানতে কমলাপুর রেল স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ফোন করা হলে সেখানে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা ক্ষেপে গিয়ে তার নম্বর কে দিয়েছে জানতে চান। এরপর সুবর্ণা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেনটি ছাড়া হবে জানিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
এঘটনায় কমলাপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা ট্রেনগুলো প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে রওয়ানা হয়েছে।