বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার বৈশ্বিক ঐকমত্যের সাথে সঙ্গতি রেখে নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারে মনযোগ দিতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যাপক ভিত্তিক সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মতবিরোধের মধ্যেও সারাবিশ্ব আজ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এবং এজন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে অধিকাংশ দেশ। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশেও নবায়নযোগ্য শক্তির বিকাশে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে।
মঙ্গলবার ঢাকায় ‘বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহায়তায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় এই সংলাপ আয়োজন করে।
সংলাপে অংশগ্রহণ করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ মো. আসলাম হোসাইন সওদাগর, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ মো. ফরিদুল হক খান এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটওয়ারি।
বক্তারা বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকারী এবং সরকারি বিদ্যুৎ সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর (আরইবি ও পিডিবি) মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তারা বিশেষত যারা সোলার হোম সিস্টেম, সোলার মিনিগ্রিড ও সোলার ইরিগেশন পাম্পের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছেন, তারা ব্যবসায় কাঙ্ক্ষিত লাভ করতে পারছেন না, এমন কি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
তারা বলেন, আগে গ্রিড সংযোগ ছিল না এমন এলাকায় যারা নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবসা করা শুরু করেছিলেন সেখানে গ্রিড সংযোগ পৌঁছে যাওয়ায় এমন হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা ইডকল সমর্থিত অর্থায়ন পরিশোধে ব্যর্থ হতে বাধ্য। এর ফলে এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী যে সুনাম হয়েছে তা বিঘ্নিত হতে পারে। এছাড়াও আমদানি করের চাপ, নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে মান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকা, নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার ব্যবস্থা না থাকা ইত্যাদি কারণেও বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রসার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, সরকার, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থা ও অন্যান্য অংশীদাররা বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারে যথাসম্ভব উদ্যোগ নিতে প্রতিশ্রুত। এজন্য বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা সুসমন্বিতভাবে অর্জনের উদ্যোগ নিতে হবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অক্সফাম ইন বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর সাইফুল আলম, উন্নয়ন সমন্বয়ের কো-অর্ডিনেটর জাহিদ রহমানসহ আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান, নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষজ্ঞ, নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোক্তা, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।