জরিমানার টাকা জোগাড় করতে না পারার হতাশায় আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীকে একটি আবেদনপত্র দিয়েছেন।
বুধবার বেলা সাড়ে এগারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানা প্রক্টরকে জরিমানা মওকুফের আবেদন শিরোনামে একটি আবেদনপত্রে এই কথা উল্লেখ করেছেন।
সোহেল রানা এমন সময় প্রক্টরকে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছে যেসময় গণমাধ্যমে একের পর এক ঢাবি শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বর্তমান নয়জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
প্রক্টর ওই ছাত্রের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী জরিমানা মওকুফের আবেদন জানিয়ে একটি আবেদনপত্র দিয়েছে। আমি সেটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর ফরোয়ার্ড করেছি।
প্রক্টরকে পাঠানো ওই চিঠিতে সোহেল রানা লিখেছেন, ‘আমি সোহেল রানা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। সপ্তম সেমিস্টারে ৪০১ নম্বর কোর্সের জন্য ডিনস কমিটি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। আমার বাবা হার্ট অ্যাটাকের রোগী যার ওপর পরিবারের সবাই নির্ভরশীল। তার পক্ষে এত টাকা দেয়া সম্ভব নয়। সবাই পরীক্ষা দিলেও আমি টাকার অভাবে না দিতে পারায় হতাশায় ভুগছি। হতাশা থেকে আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।’
আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সোহেল রানা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমি এখনও জরিমানার টাকা জোগাড় করতে পারিনি। টাকার অভাবে যদি আমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারি আর এ কারণে যদি আমি আত্মহত্যা করি তাহলে এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।’
উল্লেখ্য, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার সময় গত ১৪ মে ‘যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি (কোর্স নম্বর ৪০১)’ নামক কোর্সটির পরীক্ষা দিতে পারেনি। এজন্য পরীক্ষার ফলাফলে সবার অকৃতকার্য আসে।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে অনেকবার ধর্ণা দেওয়ার পর গত ২০ নভেম্বর ডিনস কমিটির সভায় ৬১ জন শিক্ষার্থীর সবাইকে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট তিন লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা সাপেক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।