চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন ইতালির বৃদ্ধরা

করোনায় আইসিইউ সংকট

ইতালিতে নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্র (আইসিইউ) সংকটে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৮০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তিদের এই সেবা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কেননা তরুণদের তুলনায় তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম। একটি নথির বরাতে এমন দাবি করেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’। 

সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, ইতালিতে প্রতিদিনই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বহুগুণে বাড়ছে। আর এতে সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হচ্ছে হাসপাতালগুলোর আইসিইউতে। এই সংকট কাটাতে কর্তৃপক্ষ অমানবিক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইতালির চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে এরই মধ্যে কিছু রোগীকে আইসিইউ সেবা থেকে বঞ্চিত করার কথা জানিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বয়স্ক এসব রোগীর সামনে মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

তুরিন শহরের সংকট ব্যবস্থাপনা ইউনিটের এক নথির উদ্ধৃত করে টেলিগ্রাফ দাবি করেছে, যদি হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ে, সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত আইসিইউ বিছানা সংকট কাটাতে ৮০ বছরের বেশি বয়সী মানুষকে আইসিইউতে রাখা হবে না।

মূলত যুদ্ধের সময় যেভাবে বয়স আর বাঁচার সম্ভাবনা বিচার করে আহত বা অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হয়, এখন সেই নিয়মই অনুসরণ করা হচ্ছে।

পরিসংখ্যান বলছে, নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া রোগীদের বেশির ভাগের বয়স ৮০ বা তার ঊর্ধ্বে।

ভক্স নিউজের এক প্রতিবেদন বলা হয়, গত সপ্তাহে ইতালিতে ১০৫ জন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাদের বেশির ভাগের বয়স ৮১ বছরের ঊর্ধ্বে।

আইসিইউ সংকটের পাশাপাশি ইতালিতে সংকট তৈরি হয়েছে শেষকৃত্য নিয়েও। মৃত ব্যক্তিদের প্রতি ৩০ মিনিট পর পর দাফন করা হচ্ছে।

লম্বার্ডির বার্গামোর স্থানীয় হাসপাতালের কবরস্থানটিতে আর কোনো স্থান খালি নেই। তাই শেষকৃত্যের অপেক্ষায় মরদেহগুলো রাখা হয়েছে চার্চে।

শহরের স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে ১০ পাতা জুড়ে শুধুই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর সংবাদ ছাপানো হয়েছে।

ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৪১ জনের। শনিবার নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৭ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ১৫৭ জন।