ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ শুক্রবার সকালে বর্ষা উৎসবের আয়োজন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। এ আয়োজনে ছিল আলোচনা, সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তিসহ পরিবেশ রক্ষায় বিনা মূল্যে চারা বিতরণসহ বৈচিত্র্যময় নানা কর্মসূচি।
বিজন চন্দ্র মিস্ত্রীর পরিবেশনায় রাগসংগীত দিয়ে শুরু হয় বর্ষা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর রবীন্দ্রনাথের ‘মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো’ গানের সঙ্গে স্পন্দনের শিল্পীরা দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর-এ-সাত্তার শোনান শামসুর রাহমানের কবিতা।
সত্যেন শিল্পী শিল্পীগোষ্ঠীর দলীয় পরিবেশনা ‘এসো শ্যামল সুন্দর’-এর পর রবীন্দ্রসংগীত ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যজনের শিল্পীরা। বহ্নিশিখার শিল্পীরা নজরুল ‘মেঘের ডমরু ঘন বাজে’ গানে বর্ষার রূপকে ফুটিয়ে তুললেন।
অনুষ্ঠানে জয় গোস্বামীর ‘মেঘবালিকার জন্য রূপকথা’ শোনান নায়লা তারান্নুম চৌধুরী। সংগীতশিল্পী আবু বকর সিদ্দিক শোনান উকিল মুন্সীর গান ‘আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানিরে’, মামুন জাহিদ খান শোনান আধুনিক গান ‘বরষা তুমি অমনভাবে ঝরো না’ ইত্যাদি গান।
বর্ষাকথন-পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রকৃতি সুরক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আশা করব, মানুষ প্রকৃতিকে ভালোবেসে প্রকৃতি সুরক্ষা, ঋতুবৈচিত্র্য রক্ষায় যা কিছু প্রয়োজনীয়-করণীয়; সবকিছু করবে। প্রকৃতির ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন বন্ধে তারা আরও সচেতন হবে।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘বর্ষা বাঙালির জীবনে এক আশীর্বাদ। আমাদের বোকামি আর অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে বর্ষা হয়ে উঠে অভিশাপ। খালবিল ভরাট করছি, নদীগুলো ঠিকমতো ড্রেজিং হচ্ছে না, ভরাট হচ্ছে। বর্ষাকে আসলে যেভাবে গ্রহণ করা উচিত, আমরা তা করছি না। বর্ষাকে, প্রকৃতিকে মানুষের কাজে ব্যবহার করতে হবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি অধ্যাপক নিগার চৌধুরী বলেন, বর্ষা উৎসবের মতো অসাম্প্রদায়িক উৎসবে যোগ দিয়ে উৎসবপ্রিয় বাঙালিরা সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হবেন, তাঁরাই প্রতিহত করবেন সাম্প্রদায়িকতা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজারুল ইসলাম।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: