দেখে কিছুতেই গরু বলে মনে হবে না। আকৃতিতে এতই ছোট যে মনে হবে বুঝি তিন মাস বয়সী কোন বাছুর। কিন্তু এগুলোই নাকি পরিণত গরু। জন্মস্থান ভুটান থেকে সরাসরি গাবতলী পশুর হাটে। শুক্রবার বিকেলে গাবতলী হাট ঘুরে দেখা মেলে দুটি ভুটানি গরুর।
আকৃতিতে ছোট হলেও দামে মোটেও ছোট নয়। বিক্রেতা জানালেন প্রতিটি গরুর মূল্য ৫০ হাজারের ওপরে।
ভুটানি গরুর আমদানিকারক আমজাদ হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ৫টি গরু এনেছিলাম। তার মধ্যে তিনটি বিক্রি হয়ে গেছে। প্রতিটি ৫০ হাজার বা তার ওপরে বিক্রি করেছি।
এত টাকা দিয়ে এত ছোট গরু ক্রেতারা কেন কিনবে জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, কোরবানির পশুরতো আসলে মাংসের হিসেবে করে কেউ কেনে না। সবাই চায় সুন্দর এবং ব্যতিক্রমী পশু কিনতে। সে হিসেবে এ গরুগুলোর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ রয়েছে।
একই বিক্রেতা আমদানি করেছেন মরুভূমির পশু উট এবং দুম্বা। প্রতিটি উটের দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা করে। তবে ১৩ লাখ হলে বিক্রি করবেন বলে জানালেন। এছাড়া ভেড়ার চেয়ে আকৃতিতে কিছুটা বড় একেকটি দুম্বার দাম হাঁকা হচ্ছে পাঁচ লাখ টাকা। তবে তিন লাখ বা এর ওপরে হলে বিক্রি করবেন বলে জানালেন আমজাদ।
মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি
হাট ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরাবরের মত এবারও মাঝারি আকৃতির গরুর চাহিদা বেশি। ৫০ থেকে ৮০ হাজারের মধ্যে দামের গরুগুলোর বিক্রি বেশি।
কুষ্টিয়ার সুমন ব্যাপারী গত সোমবারে গাবতলী হাটে এসেছেন ১৮টি গরু নিয়ে তার গরুগুলো মাঝারি সাইজের। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তার ছয়টি গরু বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করেছেন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: আশা ছিল আরও বেশি দামে বিক্রি করবো। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাইনি।
দাম বেশি দাম কম
পশুর দাম নিয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ক্রেতারা বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার পশুর দাম বেশি, বিক্রেতারা বলছেন ‘পানির দামে’ গরু বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর মনিপুরী পাড়ার জাবেদ হোসেন একটি গরু ক্রয় করেছেন ৫৭ হাজার টাকায়। তিনি জানান, গত বছর এই সাইজের গরুর দাম সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু এবার প্রতিটির দাম ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় বেশি বিক্রি হচ্ছে।
চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে ৬টি গরু নিয়ে এসেছেন আবদুস সাত্তার। তিনি জানালেন, আমার খামার থেকে প্রতিবছরই গরু বিক্রি করি। গত বছর যে গরুগুলো ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছি এবার একই সাইজের গরু ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।