চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

খালেদার এক মামলায় ‘দীর্ঘ’ বিরতি

‘দীর্ঘ’ বিরতির দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ‘কষ্টের’ কথা বিবেচনায় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের-দুদক আইনজীবীর আবেদনের পর এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশিবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত ৩য় দিনের মতো যুক্তিতর্ক শেষ করে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন ধার্য করেন।

মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সড়কে যানজট হচ্ছে অনেক। কোমলমতি শিশুদের দিকে দেখে আদালতের কাছে সময়ের জন্য আবেদন করেছিলাম। আদালত ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতি করেছেন।

২৩ দিনের বিরতি পাওয়ার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা একে দীর্ঘ বিরতি বলে উল্লেখ করে বলছেন, এর পেছনে নিশ্চয়ই সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।

আদালত শেষে ড. জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি আদালতকে শুরুতেই বলেছিলাম যে, আজকে যুক্তিতর্কের সকল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি এবং আজকেই আমার যুক্তিতর্ক শেষ করবো। আমাদের সিনিয়র আইনজীবীরাও সেরকম প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শুনানির এক পযায়ে দুদকের আইনজীবী এসএসসি পরীক্ষার কথা বলে সময় চেয়েছেন এবং আমরা দেখলাম যে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় আদালত আগামী ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন দেন। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারছি না।

এসময় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে আমিনুল ইসলাম প্রশ্ন তোলে বলেন,  আদালতের কাছে রাষ্ট্রপক্ষের সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণ যে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ছিলো আমি তা উল্লেখ করেছি।  আদালতকে বলেছি যে, এই মামলাটি করার কোন এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের নেই। তাদের আইনজীবী বলেছিলেন যে, ৯.০১.২০০৫ তারিখে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠিত হয়েছিলো। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য থেকে আমরা দেখিয়েছি যে,  শহিদ জিয়াউর রহমান চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করা হয় ১৯৯৩ সালে। তার প্রথম একাউন্ট ছিলো সোনালী ব্যাংক ফকিরাপুল শাখায়।  পরবর্তীকালে ড. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আব্দুল মতিন চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান (সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তাদের কারো দল ত্যাগ কিংবা কারো মৃত্যুতে আগের ট্রাস্টের ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আরেকটি ট্রাস্ট চালু করা হয়। যে ট্রাস্টের একাউন্ট খোলা হয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সোনালী ব্যাংকের শাখায়।    এটি আমরা তথ্য প্রমাণ থেকে দেখিযেছি। রাষ্ট্রপক্ষ যেটি দাবি করেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর অফিসে  প্রথম একাউন্টটি করা হয় এটি আমরা আজকে যুক্তিতর্কের মধ্যদিয়ে মিথ্যা প্রমাণ করতে পেরেছি।

আসামী পক্ষের আইনজীবী বলেন, জমির মালিক সুরাইয়া খানম তার বিভিন্ন স্থাপনা বাবদ  অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছেন বলে পি ডাব্লিউ ৩৩- নূর আহমদ স্বীকার করেছেন।  এই মামলার এভিডেন্সে দেখিয়েছি যে, বেগম খালেদা বা ড. জিয়াউল ইসলাম মুন্না বা মনিরুল ইসলাম কেউ কোন অর্থ গ্রহণ করেননি। সাক্ষী স্বীকার করেছেন যে, তার কাছে কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এমন কোন অভিযোগ করেননি। আমরা আদালতকে এরই প্রেক্ষিতে প্রমাণ করতে পেরেছি এই মামলা ভিত্তিহীন। ইনশাল্লাহ এই মামলায় বেগম খালেদা জিয়া সহ প্রত্যেকে নি:শর্ত এবং সম্মানজনক খালাস পাবেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১.৩৫টার দিকে আদালত শুরু হয়। শেষ হয় ১.১০টায়। এদিন বাংলা একাডেমিতে অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে মামলার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করেন আদালত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বইমেলার উদ্বোধন করবেন।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ধার্য আছে।

বিস্তারিত দেখুন পরাগ আজিমের ভিডিও রিপোর্টে: