গত বছর কোরবানির পশুর চামড়া নষ্ট হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, এ বছর কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে ভাবছে সরকার।
তিনি বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে কাঁচা চামড়ার দাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। এ বছর কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার জুম প্ল্যাটফর্মে ২০২০-২১ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ বছর কোরবানির চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকার সবকিছু করবে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চামড়া সংগ্রহের জন্য এবার কোনো অর্থ সংকট থাকবে না। প্রয়োজনে সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়টিও মাথায় রেখেছে।
চামড়ার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো পরিস্থিতি কোনো অবস্থাতেই হতে দেয়া হবে না। কয়েকদিনের মধ্যে ট্যানারি মালিকরা চামড়ার ক্রয় মূল্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন। এ বছর কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে’।
রপ্তানি আয় প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাবের ফলে গত মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে পণ্য খাতের রপ্তানি আয় কমেছে, তবে জুন মাস থেকে বাড়তে শুরু করেছে। সঠিক নীতি অনুসরণ এবং সময়মতো তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থ বছরের ৬ মাস পর বিশ্ব অর্থনীতি এবং আমাদের রপ্তানির গতিচিত্র পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পুননির্ধারণ করা হয়েছে। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব’।
‘‘গত ২০১৯-২০ অর্থবছর ৫৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৪০ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কথা বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরে ৪৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য খাতে রপ্তানির টার্গেট ৪১ বিলিয়ন ডলার এবং সার্ভিস সেক্টরে ৭ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।’’
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫৪ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে পণ্য খাতে রপ্তানির টার্গেট ছিল সাড়ে ৪৫ বিলিয়ন ডলার এবং সার্ভিস সেক্টরে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার। উভয় খাতে আয় হয়েছে ৪০ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার।
বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইর প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, বেসিসের সভাপতি আলমাস কবীর, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুল ইসলাম এবং বিকেএমইর প্রথম সহ-সভাপতি মো. হাতেম প্রমুখ।