করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি অফিসে অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার কথা বলা হলেও ব্যাংকিং সেবাসহ বেসরকারি খাতের কার্যক্রম পরিচালনায় রয়েছে অস্পষ্টতা। ৩১ মার্চ থেকে দেশজুড়ে ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে নানা নিয়ম-কানুন নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা বিশৃঙ্খল পরিবেশ। গণপরিবহনে ৫০% কম যাত্রী বহন আর ৬০% ভাড়া বৃদ্ধি বিষয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যাত্রী ভোগান্তি ও অসন্তোষের পাশাপাশি নানা অনিয়ম উঠে এসেছে গণমাধ্যমে।
গত ২৯ মার্চ করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার নতুন করে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে। করোনা রোধে সরকারের ১৮ দফার মধ্যে রয়েছে- জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান শিল্পকারখানা ৫০ শতাংশ জনবল দিয়ে পরিচালনা করতে হবে। অন্তঃসত্ত্বা, অসুস্থ, ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া পর্যটনখাতে সাময়িক বাধ্যবাধকতা নিয়ে আসা হয়েছে।
গণপরিবহন ও অফিস-আদালতের বিষয়ের মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণে তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। নির্দেশনা জারির দিন থেকেই শতভাগ কর্মী-জনবল দিয়ে দেশের অফিস আদালত চললেও ৫০% আসন সঙ্কট ছিল গণপরিবহনে। অনেক অফিস এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি, তারা কীভাবে জনবল কমিয়ে তাদের কার্যক্রম চালু রাখবে। এরমধ্যে এসেছে রাইড শেয়ারিং বন্ধের নির্দেশ, সবমিলিয়ে সবসময়ের মতো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনগণকে।
হঠাৎ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হারে বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরুর পর মানুষের মধ্যে একটু ঢিলেঢালাভাব আসায় আবারো করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আবারো কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। এ জন্য জনগণের সহায়তা দরকার।’ হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়া করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশের মানুষকে দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধও জানান শেখ হাসিনা। তিনি সবাইকে মাস্ক পরার অভ্যাসটা ধরে রাখা ও ভিড় এড়িয়ে চলতে আহ্বান জানান।
বিষয়টি খুবই দু:খজনক যে, করোনার প্রকোপ কিছুটা কমতে শুরু করার পর থেকেই জনসচেতনতা কমতে শুরু করেছে। মাস্ক ব্যবহার না করাসহ সাবান-সেনিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাসও প্রায় হারাতে বসেছে। এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বের সাথে মানা উচিত বলে আমরা মনে করি। জনগণের এইসব নিয়ম কানুন মানা হয়তো একটা নিয়মে আসবে কিন্তু সরকারের নির্দেশনা বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি ও সেবা প্রদানকারী সব নিয়ামকের মধ্যে সমন্বয় খুবই জরুরি। নাহলে করোনা দমাতে সব পদক্ষেপই ভেস্তে যাবে।