করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হিসেবে আরও ৩১২ জনের দেহে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে বাসা থেকে যুক্ত হয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন: করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন মারা গেছেন। এর ফলে করোনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯১ জনের। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩১২ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ৪৫৬ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ৯ জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ জনে।
মন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৬৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩ হাজার ৮২৫ জনের। নতুন যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে আরও ৩১২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৫৬ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯১ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৭৫ জন।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভেন্টিলেটর মেশিনে চিকিৎসা নিয়েছেন, এমন নয়জন রোগীর মধ্যে আটজনই মারা গেছেন। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সাড়ে তিন হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে আদেশ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে ১০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে।
করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের নির্দেশনা থাকলেও তা পালন হচ্ছে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, লকডাউন সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। আক্রান্ত লোকজন নতুন নতুন এলাকায় যাচ্ছেন। ফলে ওইসব এলাকার লোকজনও আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বেড়ে যাচ্ছে।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত সাড়ে ২৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার ৮৯৬ জন। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ছয় লাখের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। রোববার এ ছুটির মেয়াদ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে পরে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশবাসীকে নিজ বাড়িতে থাকার আহ্বান জানানো হয়।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।