ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশ সমীহ জাগানিয়া উচ্চতায় উঠেছে অনেক আগেই। টেস্টেও উন্নতির ছাপ রাখতে পারছেন সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। কিন্তু টি-টুয়েন্টি সংস্করণে এখনও সংগ্রাম করে যাওয়া দলের নাম বাংলাদেশ। এ বাস্তবতা থেকে বের হতে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণকে গুরুত্ব দিতে বললেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট বিপিএলে বেশিরভাগ সময়ই বিদেশি ব্যাটসম্যানদের ছায়া হয়ে থাকেন দেশিরা। কোনো কোনো দলের টপঅর্ডার সাজানোই হয় দেশের বাইরের ক্রিকেটারদের নিয়ে। হুট করে বিপিএল শুরু হওয়া ও বিদেশিদের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতার বিস্তর ফারাক গড়ে দেয় ব্যবধান। ঘাটতি কমাতে বিপিএলের আগে বড় পরিসরে স্থানীয় টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন মাহমুদ।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) শুরুর আগে মাঠে গড়াবে টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তবে সেটি খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে। এক সপ্তাহে শেষ করা হবে এটি। ওয়ানডে সংস্করণে অংশ নেয়া ১২টি ক্লাব খেলবে ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে। প্রতিটি দল পাবে দুটি করে ম্যাচ। চার গ্রপের গ্রুপের সেরা দল খেলবে সেমিফাইনালে। ওয়ানডে লিগ শুরুর কথা আগামী ১ মার্চ। আর টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। খেলোয়াড়দের ড্রাফট সোমবার।
প্রিমিয়ার লিগ শুরু হচ্ছে বলে মিরপুরে বাড়ছে ক্রিকেটার, ক্লাব-কর্মকর্তা, কোচদের আনাগোনা। রোববার হোম অব ক্রিকেটে আসেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ। বিপিএলের আগে বড় পরিসরে স্থানীয়দের নিয়ে টি-টুয়েন্টি লিগ আয়োজনের পরামর্শ তার। এবারকার টুর্নামেন্টকে ওয়ানডে লিগের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন তিনি।
‘আমার মনে হয় টি-টুয়েন্টি খেলা জরুরী। আপনি যদি আগের কথা মনে রাখেন, যদিও সেটা দামাল সামার ৫০ ওভারের ম্যাচই হত। তবে আমাদের সবার জন্য দারুণ প্রস্তুতি থাকত। আমরা এটা খেলতাম। ডিপিএলে টি-টুয়েন্টি খুব শর্ট ফরম্যাটে করছি, খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হবে তা কিন্তু না। তারপরও যেই কয়টা ম্যাচ খেলার সুযোগ হবে, সবার জন্য একটা প্রস্তুতি হবে, ক্লাবগুলোর জন্যও দেখা, কোচদের জন্য নতুন খেলোয়াড়দের দেখার সুযোগ থাকবে। আমার একটা প্রেসক্রিপশন থাকবে বিসিবিকে, সবসময় যেন প্রিমিয়ার লিগের আগে যেন করতে পারি; বড় পরিসরে, লম্বা সময় নিয়ে…। যেন ছেলেরা ন্যূনতম চার-পাঁচটা ইনিংস খেলার সুযোগ পায় পরের বছর থেকে। এই বছর আমাদের ক্রিকেট ক্যালেন্ডার খুব টাইট। এই জন্য আমাদের এত কিছু করা সম্ভব না। তবে পরবর্তী বছর হয়ত সবাই বসে আমরা চিন্তা করব।’
‘প্রিমিয়ার লিগের আগে না করলেও বিপিএলের আগে করলে আরেকটু ভাল হবে। যদি এবার (বিপিএল) দেখেন, আমাদের স্থানীয় ব্যাটসম্যানরা কিন্তু সেভাবে পারফর্ম করেনি যেভাবে অন্যরা করেছে। এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এটা সহজও না। এ ফরম্যাটে এসে আপনি ছয় মারবেন, এটা সহজ না। যারা এখানে বিদেশি বিশেষজ্ঞ এসে খেলছে, তারা কিন্তু এই কাজটাই করে। যেমন আন্দ্রে রাসেল বা সুনিল নারাইনের কথা বলি, তারা কিন্তু টি-টুয়েন্টি স্পেশালিস্ট। সারা বিশ্বজুড়ে টি-টুয়েন্টি খেলে বেড়াচ্ছে ওরা। সিপিএল, আইপিএল বা পিএসএল খেলছে। কিন্তু আমাদের ছেলেরা তো মাত্র বিপিএল খেলার সুযোগ পায়, সেটাও হুট করে শুরু হয় কোনো ম্যাচ প্র্যাকটিস ছাড়া খেলে, এখানে পারফর্ম করা সহজ না। এর আগে যদি স্থানীয়দের নিয়ে বিপিএলের মতো টুর্নামেন্ট খেলার থাকে, তাহলে আমার মনে হয় তাদের জন্য সুবিধা হবে। এটা যদি করতে পারি তাহলে ছেলেদের জন্য খুব ভাল হবে। কারণ এই ফরম্যাটে আমরা বিশ্বকাপ খেলছি, এই ফরম্যাটেও গুরুত্ব দেয়া জরুরী।’-বলেন খালেদ মাহমুদ।