টানা বৃষ্টিতে সারা দেশের মতো রাজধানীবাসীর জনজীবনে দূর্ভোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন স্থানের জলবদ্ধতা। বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর গুলশান, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে জলবদ্ধতার কারণ ও সমাধানের উপায় বলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। সমস্যার দ্রুত সমাধানে ওনার হাতে জাদু নেই বলেও জানান তিনি।
বুধবার দুপুরে কালসি সাংবাদিক খাল এলাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র আনিসুল হক জলবদ্ধতার কারণ সম্পর্কে বলেন, আমরা সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের সঙ্গে কয়েক জায়গাতে ছিলেন। বনানীতে কেন পানি জমেছে? কারণ রাজউক একটি বাঁধ দিয়ে দিয়েছে সেখানে। রাজউকের বাঁধটি দেয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এইভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে পানিগুলোর ব্যাক ফ্লো হয়েছে। আমরা আজকে সকাল থেকে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্ট সেটি কেটে দিয়েছে। এখন কিন্তু পানি চলে গিয়েছে।
‘আপনি দেখছেন যে কালসি সাংবাদিক খাল বন্ধ। এই সাংবাদিক খাল ছাড়াও অন্যান্য খালও বন্ধ। সাংবাদিক খালের পানি নড়ে না। ১০ ফিটের খাল হয়তো দুই ফিট ভিতরে আজকে টের পেয়েছেন। পানিটাকে তো যেতে দিতে হবে। পানির তো একটা ফ্লো দরকার।’
তিনি বলেন, এই এলাকার মিরপুরের যতো জায়গা দেখছেন, কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে আমরা দেখে আসলাম, বিআরডির কাজ হচ্ছে, যেখানে-সেখানে জলাধার বন্ধ। রাজধানীর সমস্ত জলাধার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এই খাল কিন্তু আমি পরিষ্কার করতে পারবো না। কারণ এটি মেয়রের ডিপার্টমেন্ট না। আপনারা দেখেছেন গত সপ্তাহে আমরা মিটিং করেছি। বরং ওয়াসা বলছে মেয়রকে দায়িত্ব দিয়ে দাও। আমরা বলছি আমরা দায়িত্ব নিতে চাই। দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা আর এটি শুরু হওয়া অনেক সময়ের ব্যাপার। সুতরাং ওয়াসাকে ইমার্জেন্সি ব্যাসিসে এই খালগুলোকে পরিষ্কার করে দিতে হবে। আরেকবার বা দুবার। এছাড়া পানি নড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।
জলবদ্ধতার আশু কোন সমাধান নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পানিতে সম্পূর্ণ শহর বন্ধ হয়ে গেছে। আশু কোন সমাধান নেই। আমরা যে এলাকায় ড্রেন বানিয়েছি। সেসব এলাকায় কিন্তু পানি জমে নি। এখনও আমরা অনেক ড্রেন বানাচ্ছি। এই এলাকায় আগামী বছর পানি কমে যাবে। যে করেই হোক এই এলাকায় আমরা পানি জমা বন্ধ করবো। যেসব জায়গায় রাস্তায় ড্রেন বানাচ্ছি, সেসব জায়গায় পানি কমে যাবে দ্রুত। পানিকে যেতে দিতে হবে।
এ বছরই সমাধান হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, বৃষ্টির উপর নির্ভর করে। এরকম যাতে আর না হয় সেটি আমরা আশা করি। মেয়রের হাতে কিন্তু কোন জাদু নেই, শুধু মেয়র বললে ভুল হবে কারও হাতে কোন জাদু নেই। যেভাবে আমরা খাল বন্ধ করে রেখেছি, রাস্তার পাশে দেখেন সব নোটিস বোর্ড লাগানো, অমুক কোম্পানি, তমুক কোম্পানি জমি বিক্রি হবে, এখানে সব নালা ছিল, মেয়র কি করবে??প্রশ্ন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মেয়রের হাতে তো ক্ষমতা নেই ওদেরকে তুলে দেওয়ার। রেডিসনের সামনের জমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এরকম আরো অনেক আছে। সুতরাং চলতে হবে এদের সঙ্গে নিয়েই। যতটুকু সম্ভব আগামী দু বছরে আমরা ড্রেন করবো। আর এ খাল (কালসি সাংবাদিক খাল) কাটতেই হবে। না হলে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হবেই।’