চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এডিপি বরাদ্দ হতে পারে ১ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা

আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিতে পারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এডিপি নিয়ে একটি বৈঠক হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন এনইসি চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বৈঠকে এডিপির এই অনুমোদন দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী এডিপি হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উন্নয়ন বাজেট। এতে পদ্মা সেতু, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্লান্ট, পদ্মাসেতু রেল লিংক, ঢাকা মেট্টো রেলের মতো কিছু মেগা অবকাঠামো নির্মাণে জোর গুরুত্ব দেয়া হবে। তবে এবার পরিবহন খাতে বরাদ্দ বেশি হতে পারে।

তিনি বলেন, মোট এডিপি’র ১ লাখ ১৯ হাজার ৮শ ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা স্থানীয় উৎস থেকে এবং ৬১ হাজার ৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বিদেশি উৎস থেকে আসতে পারে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দ ২০১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ থেকে ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ২৪ হাজার ৬শ ১৯ কোটি টাকা বেশি।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসমূহের তহবিল ৭ হাজার ৮শ ৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা বাদে আগামী অর্থবছরের অনুমিত মূল এডিপি দাঁড়াবে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা আসবে স্থানীয় উৎস থেকে এবং বাকী ৬০ হাজার কোটি টাকা আসবে বিদেশী উৎস থেকে।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ যদি যৌক্তিক চাহিদা তুলে ধরে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাদ্দ বাড়াতে পারেন এমন তথ্য দিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল, কর্ণফুলি টানেল এবং মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেতে পারে।

প্রস্তাবিত এডিপি’তে পরিবহন খাতে ৪৫ হাজার ৪শ ৪৯ কোটি টাকার সবোর্চ্চ বরাদ্দ পাবে। এই অর্থ মোট বাজেটের ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ পাবে ২২ হাজার ৯শ ৩০ কোটি টাকা; যা মোট বরাদ্দের ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এছাড়া ফিজিকেল প্লানিং, ওয়াটার সাপ্লাই, হাউজিং সেক্টর পাবে ১৭ হাজার ৮শ ৯০ কোটি টাকা, পল্লী উন্নয়ন সংস্থা পাবে ১৬ হাজার ৬শ ৯০ কোটি টাকা, শিক্ষা ও ধর্ম পাবে ১৬ হাজার ৬শ ২০ কোটি টাকা, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পাবে ১৪ হাজার ২শ ১০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ১১ হাজার ৯শ ৫ কোটি টাকা, কৃষি ৭ হাজার ৭৬ কোটি টাকা, পানি সম্পদ ৪ হাজার ৫শ ৯২ কোটি টাকা এবং জনপ্রশাসন পাবে ৩ হাজার ৩শ ৬১ কোটি টাকা।

চলতি অর্থ বছরের জন্য বাষির্ক উন্নয়ন প্রকল্পে (এডিপি) গত ৭ মার্চ সরকারের সংশোধিত বরাদ্দে ছিল ৯৬ হাজার ৩শ ৩১ কোটি টাকা, তবে বিদেশি তহবিল ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমায় তা হয় ৫২ হাজার ৫০ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অন্য এক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় একং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ১০টি মেঘা প্রকল্পে প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার ১শ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিক পদ্মা সেতু প্রকল্পে, সেতু বিভাগ পরবর্তী এডিপি’তে ৯ হাজার ১শ ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ পাবে ২০ হাজার ৮শ ১৭ কোটি টাকা, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে রেল মন্ত্রণালয় পাবে ১১ হাজার ১শ ৫৪ কোটি টাকা।

পাশাপাশি মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে বিদ্যুৎ বিভাগে বরাদ্দ দেয়া হবে ২২ হাজার ৮শ ৯৩ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, আগামী অর্থবছরের মধ্যে এডিপিতে মোট ১ হাজার ৩শ ৪৬টি উন্নয়ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫০টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

কমিশনের মুখপাত্র জানান, মোট ১ হাজার ৩শ ৪৬টি প্রকল্পের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ২শ ২৭টি হচ্ছে বিনিয়োগ প্রকল্প, ১১৭টি হচ্ছে কারিগরি সহায়তা প্রকল্প। এরমধ্যে দুটি হচ্ছে জাপান ঋণ সহায়তা প্রকল্প এবং বাকি প্রকল্পগুলো হচ্ছে সরকারের স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।

প্রস্তাবিত এডিপি’তে ৬১টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) এর মাধ্যমে।