চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি কমেছে। এ নিয়ে নানা সমালোচনার মধ্যে মঙ্গলবার এলো সুখবর। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা জাপানে জনশক্তি রপ্তানির দুয়ার খুলেছে। বিভিন্ন খাতে দেশটি বাংলাদেশের দক্ষ কর্মী নিয়োগ করবে। এ জন্য দুই দেশের সরকারের মধ্যে সহযোগিতা স্মারকও স্বাক্ষর হয়েছে।

মূলত আগামী ৫ বছরে ৯টি দেশ থেকে ৩ লাখ ৩৪ হাজার কর্মী নিয়োগ করবে জাপান। যদিও প্রাথমিকভাবে আটটি দেশ থেকে জনশক্তি নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জাপান। পরে সেই তালিকায় ভিয়েতনাম, চীন, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, পূর্ব এশিয়ার অন্য একটি দেশের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশেরও নাম।

প্রাথমিক চুক্তি অনুযায়ী জাপান দুই ক্যাটাগরিতে লোক নেবে। প্রথম ক্যাটাগরিতে জাপানী ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা থাকলে একজন পাঁচ বছর জাপানে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এই ক্যাটাগরিতে কেয়ার ওয়ার্কার, বিল্ডিং ক্লিনিং ম্যানেজমেন্ট, মেশিন পার্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, ইলেকট্রিক, ইলেক্ট্রনিক্স, কন্সট্রাকশন, জাহাজ শিল্প, অটোমোবাইল, কৃষিসহ ১৪টি খাতে কাজ করা যাবে। তবে তারা পরিবারকে সাথে নিতে পারবেন না।

আর দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে যাদের জাপানী ভাষা ও নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা আছে, তারা পরিবারসহ অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন। যেমন: গবেষক, শিক্ষক বা ব্যবসায়ীরা।

আমরা এরই মধ্যে জেনেছি, জাপানে জনশক্তি পাঠানোর একটা উদ্যোগ সরকারের আগে থেকেই ছিল। এ জন্যই ২০১৮ সালের শুরুতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সারাদেশে ২৬টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে জাপানি ভাষায় ৪ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানও জাপানি ভাষা শিক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, প্রথম ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে বছর খানেক সময় দিলেই একজন দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। বিশেষ করে জাপানের ভাষা শেখাটাই বড় বিষয়। কেননা এদেশে অনেক দক্ষ শ্রমিক রয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে নতুন করে দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন তাদের নেই। এখন শুধু সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা থাকলেই জাপানে অনেক শ্রমিক পাঠানো সম্ভব।

কিছুদিন আগে জাপানি শিশু, বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখাশোনা করতে বাংলাদেশি তরুণীদের জন্য কেয়ারগিভার হিসেবে সেদেশে কাজের সুযোগ আসে। সেখানেও ভাষা জানার পাশাপাশি প্রার্থীদের বয়স ২০ থেকে ২৯ বছর চাওয়া হয়েছিল। তার মানে এখন ভাষা শেখাটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাকি ৮টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে তুমুল প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। যেসব দেশ যতটা দ্রুত জাপানি ভাষা শিখবে; তারা তত বেশি লাভবান হবে।

আমরা মনে করি, এমন পরিস্থিতিতে আর সময় নষ্ট না করে, দ্রুত দক্ষ কর্মী বাছাই এবং তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই এই সুযোগের সদ্ব্যবহার সম্ভব।