উপগ্রহ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত অট্টালিকা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে একটি আর্কিটেকচার ফার্ম যা পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে বেড়াবে। পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে উপগ্রহ পর্যন্ত ‘এনালেমা টাওয়ার’ নামের এই অট্টালিকা ৩১ হাজার মাইল উপরে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে। এটি হবে পৃথিবীর সব থেকে বড় আকাশচুম্বি অট্টালিকা।
পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ হতে ৩১ হাজার ৬৮ মাইল উপরে উপগ্রহের সাথে এই টাওয়ারটি বিশেষ এক ধরনের তারের সহায়তায় ঝুলিয়ে রাখা হবে। কক্ষপথ ব্যবহার করে এটি ওই উপগ্রহের সাথে সাথে পৃথিবীর চারপাশে নির্দিষ্ট গতিতে ঘুরে বেড়াবে। নিউইয়র্ক ও হাভানাসহ আরও আটটি শহরের আদলে তৈরি হবে অট্টালিকাটি।
এই অট্টালিকার একটি অদ্ভুত নকশা তৈরি করেছে ক্লাউডস আর্কিটেকচার। এই কোম্পানীটিই অতীতে মঙ্গলে বাড়ি ও ক্লাউড সিটি নির্মাণের প্রস্তাবনা করেছিলো। আর্কিটেক্ট ফার্মটি বলছে আকাশ থেকে নিচে নেমে আসা এই বিল্ডিংটি পরিবেশ বিপরর্যয় করে সৃষ্টি করা বর্তমানের সব আকাশচুম্বি অট্টালিকার নকশাকে উল্টে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক কম খরচে আকাশচুম্বি অট্টালিকা নির্মাণ করায় দুবাই তাদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। তাই এই অট্টালিকাটি দুবাইতে স্থাপন করা হবে বলে ওই প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়।
বিভিন্ন অংশে বিভক্ত থাকবে এই এনালেমা টাওয়ার। পৃথিবীর সব থেকে কাছের অংশ থাকবে বিনোদন, কেনাকাটা ও খাওয়া-দাওয়ার জন্য। অফিসের জায়গার পাশাপাশি মাঝখানের জায়গা বাগান এবং আবাসিক এলাকার জন্য ব্যবহার করা হবে। প্রার্থনা এবং সমাধিস্তম্ভের জন্যও জায়গা রাখা হবে সেখানে। চারপাশে সোলার প্যানেল বসিয়ে শক্তি উৎপাদনের সু-ব্যবস্থা করা হবে। মেঘ থেকে সুপেয় পানি সংগ্রহের ব্যবস্থাও থাকবে বলে জানিয়েছেন নকশাকারীরা।
এই ভবনটি এতই বড় হবে যে এর উপরি অংশের থেকে পৃথিবীর গোলাকার অংশের দিকে থাকা নিচের অংশের সময়ের ব্যবধান হবে ৪৫ মিনিট। কিন্তু প্রকৌশলীরা বিশাল আকৃতির এই বিল্ডিংয়ের বায়ুমণ্ডলের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখতে পেয়েছেন যে বিল্ডিংটির উপরিভাগে মানুষ বাইরের অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে চলতে পারবেন না। ৩২ হাজার মিটার উপরের বাসিন্দারা নিচের বাসিন্দাদের চেয়ে ৪৫ মিনিট বেশি সময় ধরে দিনের আলোর বাড়তি সুবিধা পাবেন। কিন্তু উপরের অংশে এই অট্টালিকার বাইরে থাকবে -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এই কারণে তারা বিল্ডিংয়ের বাইরে যেতে পারবেন না।
উপগ্রহকে কেন্দ্র করে ব্যবহার করে এই অট্টালিকা নির্মাণের ধারণা খুব শীঘ্রই একটি বাস্তব সম্ভত ধারণায পরিণত হবে বলে দাবি করেছে ক্লাউডস আর্কিটেকচার কোম্পানী। এই ধারণার বাস্তবতা নিয়ে তারা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির রোসেটা মিশনের উদাহরণ টেনেছেন। যেখানে দেখানো হয়েছে যে ঘূর্ণয়মানে উপগ্রহে স্থাপনা নির্মাণ করা সম্ভব।