ইস্পাহানি মির্জাপুরের উদ্যোগে ও পৃষ্ঠপোষকতায় চ্যানেল আই-এ বাংলা ভাষা নিয়ে মেধাভিত্তিক টিভি রিয়্যালিটি শো ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ; এর তৃতীয় আসর শুরু হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা, বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আজ দুপুরে চ্যানেল আইয়ের ছাদ বারান্দায় এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনটির উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব হাবিবুল্লাহ সিরাজী। অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেছেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতার তিন বিচারক কথা সাহিত্যিক ও কবি আনিসুল হক, অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর এবং অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এম এম ইস্পাহানি লিমিটেডের পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানি, এমাদ ইস্পাহানি ও আলি ইস্পাহানি, ইস্পাহানি টি লিমিটেড এর মহা ব্যবস্থাপক জনাব ওমর হান্নান।
চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেছেন, ‘গত মাসের শেষ দিকে আমি ছিলাম সিঙ্গাপুরে। অনেক রাতে বাংলাদেশ থেকে একটা ফোন আসে। ফোন টা ধরলাম। প্রথম একটি বাচ্চা ছেলে এবং তারপরে তার মা। ফোন করে যা বলেছে তা হলো, তার ছেলেরা ঘুমিয়ে যায় প্রতিদিন রাত দশটার মধ্যে। আজকে জেগে আছে। কারণ ফেব্রুয়ারি মাস শুরু। কখন টেলিভিশনে বাংলা বিদের প্রমো দিবে এবং সে তাতে অংশ নিবে। সারা বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ, অসংখ্য ছাত্র অপেক্ষা করছে এই অনুষ্ঠানের জন্য।’
জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চ্যানেল আইয়ের এই প্রয়াসের সফলতা কামনা করি। বাংলা ভাষা যেন অন্য সব ভাষাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে’। তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ মনে করে মাতৃভাষায় শিক্ষিত না করে কেবল মাত্র বিদেশী ভাষায় শিক্ষিত করে সন্তানদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করবে, তাহলে তারা মূর্খের সাগরে বাস করছে।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব হাবিবুল্লাহ সিরাজি বলেন, ‘আশা করছি পরবর্তী প্রজন্ম যেন বাংলাকে ধারণ করতে পারে হৃদয়ে এবং মস্তিষ্কে।’
অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেছে, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাকে ছড়িয়ে দেয়া চারিদিকে। কারণ এই বাংলার জন্যই আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র’।
আনিসুল হক বলেছেন, ‘এমন সুন্দর একটি উদ্যোগের মাধ্যমে শিশু কিশোর এবং অভিভাবকদের জাগিয়ে তোলার অনুষ্ঠান করার জন্য ইস্পাহানি মির্জাপুরকে এবং চ্যানেল আইকে ধন্যবাদ’।
অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার বলেছেন, ‘যত কাজ করি তার কোনোটাতেই আত্মতৃপ্তি পাই না। কিন্তু বাংলাবিদের বিচারকের কাজ করে আত্মতৃপ্তি পাই। বাচ্চারা এত জানে, এটা দেখে খুব ভালো লাগে’।
আজ থেকে ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ ২০১৮’ প্রতিযোগিতার নাম নিবন্ধন শুরু হয়েছে। দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের সাথে কুমিল্লা শহরের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। এ প্রতিযোগিতায় শুদ্ধ বাংলা ভাষার ব্যবহার, বানান চর্চা, শুদ্ধ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় শেষে চূড়ান্ত বিজয়ী নির্ধারণ করা হবে। দেশ সেরা বাংলাবিদ পুরস্কার হিসেবে পাবে ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী পাবে যথাক্রমে তিন ও দুই লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। বাকি ১০ জন প্রতিযোগী পাবেন একটি ল্যাপটপ ও ব্যক্তিগত পাঠাগার গড়ে তোলার জন্য ৫০ হাজার টাকা সমমূল্যের বই ও আলমারি।
ছবি: জাকির সবুজ