শফিউল ইসলামের বলে গালিতে ধরা পড়লেন মুমিনুল হক। ওরকম ক্যাচ ওভাবে ঝাঁপিয়ে মুঠোয় জমিয়ে ফেলবেন, ভাবতে পারেননি আরিফুল হকও। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুলের সাজঘরে ফেরার সময় তাই চোখে-মুখে বিস্ময়! বোলার শফিউল ভাসছিলেন আনন্দে।
বৃহস্পতিবার বিসিএলের পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গালিতে ফিল্ডিং করছিলেন আরিফুল। তখনই এলো সুযোগটা। হাতছাড়াও করেননি। বাঁদিকে অনেকটা ঝাঁপিয়ে বল তালুবন্দী করেই আরিফুল দেন ভোঁ-দৌড়। তার দিকে ছুঁটে আসেন সতীর্থরা। মিনিট দুয়েক ধরে চলে তাদের উদযাপন।
মুমিনুলের স্কয়ার কাটটি বুলেট গতিতেই পেরিয়ে যাচ্ছিল আরিফুলকে। প্রতিক্রিয়া দেখাতে মোটেও দেরি করেননি তৎপর থাকা এ ফিল্ডার। সঙ্গে সঙ্গে বাঁদিকে ঝাঁপ দেন। বল তালুবন্দীর সময় তার শরীর ছিল ভূমি সমান্তরালে। লম্বা করে প্রসারিত করা বাঁহাতে জমা পড়ে বল।
বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বরাবরের সমস্যা ক্যাচিং। বিশেষ করে ক্লোজ পজিশনে। মিরপুরে সেখান থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টাই যেন দেখা গেল আরিফুলদের মাঝে!
স্লিপ এবং গালি অঞ্চলে ক্যাচ নেয়া বাংলাদেশের ফিল্ডারদের জন্য কঠিনতম কাজের একটি। সেই কাজটি আরও কঠিন হয়ে যায় যখন পেস বোলাররা ধারাবাহিকভাবে সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হন। বোলাররা নিয়মিত সুযোগ তৈরি করতে পারলে ফিল্ডারদের মাঝেও থাকে পূর্ণ মনোযোগ। আরিফুলের ওই ক্যাচ যেন সেটিরই বার্তা। এদিন পেস বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছেন, পেছনের ফিল্ডাররাও ছিলেন বাড়তি সতর্ক। অবিশ্বাস্য ক্যাচটি নিয়ে আরিফুল যেন বুঝিয়ে দিলেন ফিল্ডিংয়ের পেছনে থাকে বোলিংয়ের প্রভাবও!
ক্যাচিং নিয়ে বাংলাদেশের আক্ষেপ বহুদিনের। সম্ভাবনা জাগিয়েও টেস্ট হারতে হয় ক্যাচ হাতছাড়ার কারণে। দিন শেষে আক্ষেপ রয়ে যায় দুই-একটি সুযোগ হাতছাড়া করার। আরিফুলের প্রচেষ্টার মত এরকম দারুণ কিছু ক্যাচ হয়ত সামনের দিনগুলোতে পাল্টে দেবে বাংলাদেশের কোন ম্যাচের চেহারাও।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের তৃতীয় দিনে দুবার ব্যাটিংয়ে নামতে হয় মুমিনুলদের। তৃতীয় দিনে দুবার অলআউট হয় ইস্ট জোন। প্রথম ইনিংস ২১৭ রানে থামলে ১৯৮ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামা ইস্টের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ১৭০ রানে। আরিফুলকে ক্যাচ দিয়ে মুমিনুল ফেরার পর আর হাল ধরতে পারেনি কেউ।
প্রথম ইনিংসে নর্থ জোন করে ৪১৫ রান। মুমিনুলের দল ম্যাচ হারে ইনিংস ও ২৮ রানের ব্যবধানে।
দুই ইনিংসে সাতটি করে উইকেট নিয়েছেন তরুণ পেসার ইয়াসিন ও শরিফুল। দারুণ বোলিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংও দারুণ হয়েছে নর্থ জোনের।