চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কার গুলিতে নিহত একবার ক্রসফায়ারে বেঁচে যাওয়া আমির?

কেরাণীগঞ্জে শিশু পরাগ অপহরণ মামলার প্রধান আসামী নিহত সন্ত্রাসী মোক্তার হোসেন আমির ওরফে ল্যাংড়া আমির পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ না সহযোগীদের গুলিতে নিহত হয়েছে তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ মিজান শাফিউর রহমান।

মঙ্গলবার দুপুরে পুরান ঢাকার জনসন রোডে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমির কোন পক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছে সেটি তদন্তের পরই বলা যাবে। কারণ এটি লাইন অব এক্সচেঞ্জের বিষয়। সে কোন দিক দিয়ে পালাতে গিয়ে কার গুলিতে নিহত হয়েছে সেটা বলা মুশকিল।

‘তদন্তের আগে তা বলা যাচ্ছে না।’

পুলিশ সুপার বলেন, আমির নিজেই গডফাদার ছিল তবে আমিরের গডফাদারদের চিহ্নিত করা যায়নি। টেকনোলজি ব্যবহার করে আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের শনাক্ত করা গেলেই অবশ্যই গ্রেফতার করা যাবে।

তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সোমবার (৩১ জুলাই) বাগেরহাট জেলার শরণখোলা থেকে সন্ত্রাসী আমিরকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে পুলিশকে জানায়, তার ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেরাণীগঞ্জের মীরেরবাগ ওরিয়েন্টাল টেক্সটাইল মিলের পাশের একটি স্থানে মজুদ আছে।আমিরের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে সাথে নিয়েই মীরেরবাগ এলাকায় অস্ত্র উদ্ধার করতে অভিযান চালায় পুলিশ। সেসময় আমিরের সহযোগীরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের গুলি বিনিময় হয়।

এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় এবং আমিরকে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় জানিয়ে এসপি বলেন, পরে তাকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও প্রায় ২৪ ইঞ্চি লম্বা দুটি  ছোরা উদ্ধার করা হয় বলেও জানান ঢাকার পুলিশ সুপার।

সন্ত্রাসী আমির বিভিন্ন থানায় দায়ের করা ১৪টি মামলার প্রধান আসামি জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আলোচিত পরাগ অপহরণ মামলাসহ ২টি খুন, ২টি অপহরণ, ৩টি অস্ত্র মামলা, ২টি পুলিশ অ্যাসল্ট, ১টি পুলিশ হেফাজত থেকে পালানো , ৩টি চাঁদা দাবী ও গুলি করে আহত করার মামলাসহ মোট ১৪টি মামলার প্রধান আসামি এই আমির। দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে আরো মামলা রয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন: আগে থেকেই আমিরের নামে হত্যা মামলা থাকলেও মূলত আলোচনায় আসে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর। সেদিন বাসার সামনে থেকে মা, বোন আর গাড়িচালককে গুলি করে শিশু পরাগ মণ্ডলকে অপহরণ করে আমির। পরাগ অপহরণের ১৪ দিনের মাথায় ২৩ নভেম্বর অপহরণ মামলার প্রধান আসামি মোক্তার হোসেন ওরফে ল্যাংড়া আমির টঙ্গীতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে খবর বের হয়।

পরে জানা যায়, মাথায় গুলিবিদ্ধ হলেও বেঁচে আছে আমির। সুস্থ হয়ে কারাগারে অবস্থানের একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট ঢাকার আদালতের হাজতখানা থেকে পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে সে পালিয়ে যায়।