সম্প্রতি অনলাইনে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো নৌকা নিয়ে বেশ সরব। সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকসহ অনলাইনভিত্তিক নানা ধরনের কার্যক্রমে নৌকা প্রতীকের প্রচার চোখে পড়ার মতো।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১৭ মে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ‘ভরসা রাখুন নৌকায়’ শিরোনামে একটি অ্যাপলিকেশন চালু করা হয়। এর মাধ্যমে ‘ভরসা রাখুন নৌকায়’ লেখা সংবলিত লোগো দিয়ে ফেসবুকে প্রোফাইল ছবি কাস্টমাইজ করে পরিবর্তন করতে পারছেন ব্যবহারকারীরা। এই অ্যাপলিকেশন চালু হওয়ার পর বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
কিন্তু অনলাইনে হঠাৎ কেন নৌকার প্রচার?
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেছেন, প্রচারযুদ্ধে অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি ফেসবুককে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি তাদের পরিকল্পনার অংশ, আকস্মিক কোন বিষয় নয়।
তারা বলছেন, অনলাইন প্রচারণার কার্যকারিতা, সহজলভ্যতা ও বিশ্বনেতাদের নির্বাচনী জয়ে অনলাইনের ভূমিকা নিয়ে গবেষণার ফল বিবেচনা করে ডিজিটাল মিডিয়াকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বিরোধীপক্ষের অপপ্রচার মোকাবেলার পাশাপাশি সরকারের সাফল্য তুলে ধরতেই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারণা জোরদার করা হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে চলতি মাসের শুরুতেই গঠন করা হয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি। এতে জায়গা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর তিন কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানটি আওয়ামী লীগের ‘থিংক ট্যাংক’ হিসেবে পরিচিত।
সিআরআই’র একাধিক গবেষক ও বিশ্লেষক বলেছেন, অনলাইনের কনটেন্ট অনেক শক্তিশালী। এই কনটেন্ট একবার সৃষ্টি করা হলে আজীবন থাকবে এমন নিশ্চয়তা রয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল কনটেন্ট মানুষের মাঝে দ্রুত ব্যাপক প্রভাব ফেলে। দেশের প্রায় পৌনে তিন কোটি মানুষ এখন স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করছেন।
এই সুযোগকে কাজে লাগাতে অনলাইনের প্রচারণা জোরদার করা হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালাও হয়। কর্মশালায় অনলাইন প্রচারণায় করণীয় ও কার্যকর কৌশল এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এতে সরকার ও দলের সাফল্য তুলে ধরা, নিজের রাজনৈতিক প্রচার ও প্রসারের জন্য রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এমপিদের লাইনে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এরপর থেকে মূলত: পাঁচ কারণে প্রচারণা বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রখম কারণটি হচ্ছে: গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সরাসরি নির্দেশ। দ্বিতীয়: গত ৮ মে সংসদ সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ, তৃতীয়: সিআরআই’র গবেষণার ফলাফলের নির্দেশনা, চতুর্থ: ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ এবং পঞ্চম: দলীয় আদর্শ বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা।
‘ভরসা রাখুন নৌকায়’ অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি ‘নৌকায় ভোট দিন’ প্রচারও চলছে।
‘নৌকায় ভোট দিন’ পেজের একজন অ্যাডমিন বলেন: আমাদের এই পেজটি মূলত: ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে চালিয়ে যাচ্ছেন। তরুণ প্রজন্ম অনলাইনে বেশি সক্রিয় থাকে, আর তরুণ ভোটারই দেশে বেশি। তাই তাদেরকে পর্যাপ্ত তথ্য ও উন্নয়নের চিত্র সম্পর্কে অবহিত করার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।