ময়মনসিংহ শহরের মহারাজা রোডের এক সংখ্যালঘু পরিবার অভিযোগ করেছে, তাদের সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে, আরো সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চলছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে জমির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের বিপ্লব কুমার গুহ মানিক জানান, মহারাজা রোডের ৯ ও ১১ নম্বর হোল্ডিংয়ে পৈতৃক সূত্রে তারা ১২.৩২ শতাংশ জমি পান। তার প্রয়াত বাবা শিশির কুমার গুহ ১৯৬২ সালে স্ত্রীকে দুই আনা, মেয়েকে দুই আনা ও তিন ছেলেকে চার আনা করে উইল করে দেন। এরপর ১৯৬৫ সালে তিনি মারা যান।
শিশির কুমারের তিন ছেলের মধ্যে সুখময় গুহ ১৯৭৫ সালে ভারতে চলে যান। পরে ১৯৯৮ সালে দেশে ফিরে ছোট ভাই বিপ্লব কুমার গুহ মানিককে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে তার অংশের জমি দেখভালের দায়িত্ব দেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সুখময় গুহ ২০১৭ সালে গোপনে দেশে ফিরে ওই জমিসহ (প্রায় ৩ শতাংশ, যা চার আনা হিসেবে পাওয়া) ভাই-বোন ও মায়ের সব জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে দেন স্থানীয় আব্দুল্লাহ আল মামুনকে।
এরপর থেকেই জমির মালিক বিপ্লব কুমার গুহ মানিক, সুবিনয় গুহ ও মীরা রানী গুহকে উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছেন অবৈধ ওই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আব্দুল্লাহ আল মামুন। আব্দুল্লাহ আল মামুন কয়েক দফা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে ১১ নম্বর মহারাজা রোডের পুরো জায়গা জবর দখল করে নেন এবং এখন ৯ নম্বর মহারাজা রোডের জায়গাসহ বাসাবাড়ি দখলে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শত বছরের পুরনো এই বাড়িটিতে স্বাধীনতার পরে এসেছেন জাতীয় চার নেতা। এই বাড়িতেই আড্ডায় বসেছেন দেশবরেণ্য বহ জ্ঞাণী-গুণী মানুষ। পাঠচক্র, খেলাঘর, রবীন্দ্র-নজরুল চর্চা, সাংস্কৃতিক আন্দোলন-সংগঠন, নির্মূল কমিটি গঠন, লোকসাহিত্য-ছড়া সংসদ, আবৃত্তি সংগঠন ইত্যাদি চলতো এই বাড়িতে। এ বাড়িতেই প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও শেখ ফজলুল হক মনির প্রিয় লোক সংস্কৃতি সংগঠন ‘ মন পবনের নাও’। ১৯৭৪ সালে পল্টন ময়দানে আওয়ামী যুব কংগ্রেসে তারা পরিবেশন করে ‘মহুয়া’ লোকনৃত্য নাট্য।