জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশ থেকে হামলায় জড়িতদের বিচার ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এর আগে সন্ত্রাস বিরোধি রাজু ভাস্কর্যে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। পরে সেখান থেকে একটা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ হয়ে টিএসসি এসে শেষ হয়।
`ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর সহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সালমান ফরাজী, শামসুন নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, ছাত্রদলের শামসুন নাহার হলের ভিপি প্রার্থী মানসুরা আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ একটি সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে৷ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে জাহাঙ্গীরনগরেও একই ঘটনার পুনুরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। দুঃখের বিষয়, কলঙ্কিত উপাচার্য ফারজানাকে রক্ষার জন্য ছাত্রলীগের লাঠিয়াল বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। গত কয়েক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে তাদের কর্মকাণ্ড কোনো ছাত্রসংগঠনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে পড়ে না। হামলাকারীদের বিচার ও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় টালবাহানা করলে তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপাচার্যের অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এই দাবি জানান তারা।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফারুক ওয়াসিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, `শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানে, ছাত্রলীগ উপাচার্যের সুরক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। কারণ উপাচার্য সুরক্ষিত থাকলে হলে হলে ছাত্রলীগের টর্চার সেল সুরক্ষিত থাকবে। আশা করি হল থেকে শিক্ষার্থীরা বাইরে যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবে না। বরং দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের গদি ছাড়তে হবে।’