ভারতের ব্যাটিং ইনিংসে তখন চলছে স্লগ ওভার। উইকেটে ধাওয়ান ও পান্ট। বিধ্বংসী দুই ব্যাটসম্যানই উইকেটে জমে গেছেন। এরপরও বড় স্কোর গড়তে পারেনি ভারত। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কাছে টি-টুয়েন্টি ম্যাচ হারে ৭ উইকেটে। কারণ হিসেবে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর এক কৌশলের কথা বললেন ভারতীয় স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল।
একদম শেষ দুই ওভার বাদে দিল্লিতে নিজেদের বোলিং দিয়ে ভারতকে দমিয়েই রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। হাতে উইকেট থাকার পরও রান বের করতে না পেরে হাঁসফাঁস করেছেন ধাওয়ানের মতো মারকুটে ব্যাটসম্যান। উইকেটের অপর প্রান্তে ছিলেন পান্ট। তার ব্যাটও চওড়া হতে পারেনি টাইগার স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কারণে।
ধাওয়ান-পান্ট দুজনেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হওয়ায় বোলিংয়ের দুপ্রান্ত দিয়েই অফস্পিনারদের ব্যবহার করেছেন মাহমুদউল্লাহ। একপ্রান্তে টানা তিন ওভার বল করে গেছেন আফিফ হোসেন, অন্যপ্রান্তে মাহমুদউল্লাহ নিজে এক ওভার করে আরেক ওভার করিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে দিয়ে। এই পাঁচ ওভারে মাত্র ২৭ রান নিতে পেরেছে ভারত, সেটিও আবার ইনিংসের শেষদিকে এসে। এক আফিফই নিজের ৩ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১১, নিয়েছেন অভিষিক্ত শিভম দুবের উইকেট। পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান তোলে রোহিতের দল।
মাহমুদউল্লাহর এই কৌশলের কারণেই রানের আকার বড় হয়নি বলে দাবী চাহালের, ‘বাংলাদেশের বোলাররা আসলেই ভালো বল করেছে, বিশেষ করে শেখর আর রিশভের ব্যাটিংয়ের সময়। মাহমুদউল্লাহ দুই প্রান্ত দিয়ে দুই অফস্পিনারকে ব্যবহার করে গেছে। এটা দারুণ এক কৌশল।’
রোববারের সেই ম্যাচে ৩ ওভার বল করে ২২ রানে লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আয়ারের গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট নিয়েছিলেন বাংলাদেশের নবীণ লেগস্পিনার আমিনুল বিপ্লব। নিজে লেগস্পিনার হওয়ায় বিপ্লবের বল ভালোই লেগেছে চাহালের, ‘ও(বিপ্লব) নিশ্চয় ঘরোয়া লিগে ভালো খেলে জাতীয় দলে খেলতে এসেছে। সে হয়তো সব মিলিয়ে ৪০-৫০টা ম্যাচ খেলেছে (দুই আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি মিলিয়ে বিপ্লব খেলেছেন সবে ২৬ ম্যাচ)। ও প্রয়োজনীয় সময়ে দুটি ভালো উইকেট নিয়েছে। সুতরাং বলতেই হয় ও ভালো স্পিনার।’
ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টুয়েন্টি জয়ের ম্যাচে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে পায়নি বাংলাদেশ। সেরা দুই খেলোয়াড়কে ছাড়াই যে টাইগাররা ভয়ঙ্কর তা মানতে দ্বিধা নেই চাহালের। তার চোখে সাকিব-তামিম ছাড়াও বেশ আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ, ‘সাকিব-তামিমকে ছাড়াই বাংলাদেশ বেশ পরিমিত এক দল। এই দলটাতে কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, নতুনরাও ভালো করছে। সুতরাং এটা মনে করার কোনো কারণই নেই যে দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে হারিয়ে তারা আরও দুর্বল হয়ে গেছে।’
‘নিধাস ট্রফির ফাইনালে আমরা যে বাংলাদেশ দলটার বিপক্ষে খেলেছিলাম প্রায় সেই দলটাই আছে। ওরা হয়তো কেবল দুইজনকে হারিয়েছে। কিন্তু ওদের ১৫জনের দিকে যদি তাকান তাহলে বলবো ওদের নতুনরা বেশ আত্মবিশ্বাসী, এক আত্মবিশ্বাসী দল।’
বাংলাদেশ দলের সাথে মুশফিককেও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন চাহাল, ‘ওদের সাধুবাদ জানাতেই হয়, ওরা আসলেই ভালো খেলেছে। বাংলাদেশ শেষ কয়েকটা ম্যাচে আমাদের কঠিন লড়াই উপহার দিয়েছে। ওরা সত্যিকার অর্থেই ভালো খেলেছে, বিশেষ করে মুশফিকুর রহিম।’