বাংলাদেশিসহ অন্যান্য ‘বিদেশি’দের শনাক্ত করে দেশ থেকে বের করে দেয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
এই নির্দেশকে অনেকেই আসামের নাগরিক নিবন্ধন তালিকা বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি)’র আরেক রূপ বলে মনে করছেন।
অবশ্য রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের পুলিশের মহাপরিচালক। তার কার্যালয় থেকে সব জেলা পুলিশ প্রধানকে পাঠানো চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে।
এই নির্বাসন প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঘটবে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরদারিতে পরিচালিত হবেও ওই নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।
বিজেপিশাসিত রাজ্য আসামে সংশোধিত নাগরিক তালিকা নিয়ে বিতর্কের মাঝেই উত্তরপ্রদেশে একই ধরনের কর্মকাণ্ডের এই নির্দেশ এলো। আসামে এনআরসি ঘোষণার ফলে সেখানে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ১৯ লাখ অধিবাসী। নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে প্রতিটি জেলার উপকণ্ঠে অবস্থিত পরিবহন হাব এবং বস্তি এলাকাগুলোতে চিরুনি অভিযান চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তিকে সন্দেহ হলেই তার সমস্ত কাগজপত্র যাচাই করে দেখতে হবে।
এছাড়া পুলিশকে এমন সরকারি কর্মচারিদেরও খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে যারা ‘বিদেশিদের’ জন্য জাল দলিলাদি তৈরি করতে সহায়তা করেছেন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, এই শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশি বা অন্যান্য দেশের মানুষ হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হবে। এছাড়া পুলিশের তরফ থেকে সবগুলো নির্মাণ সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে, তাদের অধীনে কাজ করা সব শ্রমিকের পরিচয়ের প্রমাণপত্র রাখা তাদের দায়িত্ব।
গত মাসে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আসাম এনআরসির প্রশংসা করে বলেছিলেন, প্রয়োজনে তিনি নিজের রাজ্যেও একই রকম পদক্ষেপ নেবেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আসাম এনআরসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আসামে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে হওয়া নাগরিকের তালিকাটি অবশ্য অন্যরকম ছিল। কারণ আসামে কারা জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং কে বাংলাদেশ বা প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে এসেছিলেন তা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে হিসাবে এটি করা হয়েছিল।
যারা পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার একদিন আগে, অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত আসামের বাসিন্দা ছিলেন তারা যদি ওই সময়ের মধ্যে আসামে তাদের অবস্থানের বিষয়টি প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে এনআরসিতে তাদেরকে ভারতের নাগরিক হিসেবেই বিবেচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।