ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করিয়ে ‘শাস্তি’ দিয়েছেন স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান। সেই অমানুষিক কাজের ভিডিও আবার ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
নিজে একজন শিক্ষক হয়ে অন্য শিক্ষকের এমন অমানুষিক নির্যাতন কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না প্রবাসী শিক্ষক আমিনুল হক ইসলাম। তিনি স্ট্যাটাসে অত্যন্ত ক্ষিপ্ত মনে লিখেন, একজন শিক্ষকে কানে উঠ-বস করানোর চেয়ে গুলি করে মেরে ফেলাই মনে হয় ভালো ছিল।
তিনি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, রাতে একটুও ঘুম হয়নি। বিছানায় এপাশ ওপাশ করেছি। ঠিক ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটা ভিডিও দেখার দুর্ভাগ্য আমার হয়েছে। ওই ভিডিও’তে দেখলাম একজন সাংসদ এক স্কুল শিক্ষককে তার ছাত্র-ছাত্রী সহ অনেক মানুষের সামনে কান ধরে উঠ-বস করাচ্ছেন।
শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে এভাবে কান ধরে উঠ-বস করতে দেখে আমার বার বার মনে হয়েছে এর চাইতে গুলি করে তাকে মেরে ফেললেই মনে হয় ভালো হতো।
তবে এর চাইতেও অবাক হয়ে খেয়াল করলাম যারা এই দৃশ্য দেখছিল, তারা মনে হচ্ছিল খুব আনন্দ পাচ্ছে! একজন শিক্ষক কানে ধরে উঠ-বস করছে, সেই দৃশ্য দেখে যেই সমাজের মানুষ আনন্দ পায়, সেই সমাজ আর যাই হোক কোন সভ্য সমাজ হতে পারে না।
তিনি আরও লিখেন, শিক্ষক অন্যায় করেছে কি করেনি, সেই আলোচনায় যাওয়ারই তো আসলে প্রয়োজন নেই। কারণ কেউ যদি অন্যায় করেও থাকে, তার জন্য তো দেশে আইন-আদালত আছে। কানে ধরে উঠ-বস করানোর অধিকার ওই সাংসদকে কে দিল?
অবশ্য, মালাউন শিক্ষক বলে কথা! কানে ধরে উঠ-বস’ই তো শুধু করিয়েছে। পুরো পরিবার সহ মেরে ভারতে পাঠিয়ে দেয়নি যে এই তো বেশ! আমার বার বার শিক্ষক শ্যামল কান্তির কথা মনে হচ্ছে। এই শিক্ষক কি তার বাকীটা জীবন স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন? এর চাইতে গুলি করে মেরে ফেলাই মনে হয় ভালো ছিল।
তবে ওই সাংসদের বিচার আমি চাই না; আমি চাই এই কাজের পুরষ্কার হিসেবে ওই সাংসদকে মন্ত্রী বানানো হোক। পুরো পৃথিবী দেখুক কতটা অসভ্য, বর্বর জাতিতে পরিণত হয়েছি আমরা।