দেশের অর্থনীতি নানা কারণে কিছুটা উত্থানপতনের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে। ব্যাংক, শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে নানা ধরনের সূচক ও দেশি-বিদেশি প্রতিবেদন সেসব উল্লেখ করে যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। এই পরিস্থিতিতে ভয়ভীতি কাটিয়ে সব ধরনের নিয়ম মেনে ঋণ বিতরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা ও শেয়ারবাজারের অবস্থার কারণে ঋণ ও বিনিয়োগে অলিখিত নানা নিষেধাজ্ঞা যেন নিয়ম হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা কাটাতে গভর্নরের এই ঘোষণা বেশ ইতিবাচক ও সাহসী উচ্চারণ।
গভর্নর বলেন: শেরাটন শাখার হলমার্ক কেলেঙ্কারির ভয় এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সোনালী ব্যাংক। এখনও ঋণ বিতরণে দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন কর্মকর্তারা। কিন্তু এটা থাকা উচিত নয়। ব্যাংক ব্যবসায় এগুলো থাকবেই। বিতরণকৃত ঋণ কখনো সন্দেহজনক, কখনো মন্দ মানের হবেই। তাই বলে ঋণ দেওয়ার বন্ধ করবেন নাকি? খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনাসহ বিভিন্ন সূচকে সোনালী ব্যাংকের পারফরম্যান্স ভালো। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তারা যেন কোনো সমস্যায় না পড়েন, এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবসময় পাশে থাকবে। তবে বিতরণ করা ঋণ যেন ভবিষ্যতে বোঝা হয়ে না দাঁড়ায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।
দেশের বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া বড়-মাঝারি নানা অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির ঘটনা লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে, নানা অশুভ চক্র ও ক্ষমতাসীনদের অদৃশ্য হস্তক্ষেপ কাজ করেছে সেখানে। অনেকসময় চাপে পড়ে নয়তো অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরাও জড়িয়ে যায় ওই সব ঘটনায়। যার প্রভাবে ঋণ আদান-প্রদানের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয় দীর্ঘমেয়াদে। এছাড়া কোনো ঘটনা ঘটলে পরে সমস্যায় পড়তে হয়েছে ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের।
আমরা মনে করি, দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ঋণ দিতে হবে। কাজেই এই ক্ষেত্রে যথা সম্ভব স্বচ্ছতা ও নিয়ম অনুসরণ করে সব কিছু হওয়া দরকার, এছাড়া পূর্বের নানা ঘটনার মামলা ও বিচারিক কার্যক্রমে গতি আনার পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক বিচারের পরিবেশ তৈরি করা জরুরি।
আমাদের আশাবাদ, সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন।