ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তানের ডমিনিকা টেস্টের প্রথম তিন দিনে উইকেট পড়ে যেখানে মাত্র ১৫টি। সেখানে চতুর্থ দিনেই সাজঘরে ফেরেন ১৪ জন ব্যাটসম্যান। তবে এই উইকেট ঝড়ের ঘূর্ণিপাকের মধ্যেও আলো ছড়িয়েছেন ‘ব্যাটসম্যান’ ইয়াসির শাহ। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন আরেক ‘ব্যাটসম্যান’ মোহাম্মদ আমির। ইয়াসির আলোতেই এখন ইতিহাসের পথে ছুটছে পাকিস্তান।
টেস্টে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে অলআউট করে দিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী পাকিস্তানি পেসার আব্বাস। আর তাতেই পাকিস্তান পেয়েছে ১২৯ রানের লিড। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান করেছিল ৩৭৬ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ক্রিজে দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। ৯০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দলের যখন বাজে অবস্থা তখন ৬১ রানের জুটি গড়ে উদ্ধার করেন ইয়াসির-আমির। ২৭ রান করে আমির ফিরলেও ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন ইয়াসির।
৮ উইকেটে ১৭৪ রানে পাকিস্তান ইনিংস ঘোষণা করলে ক্যারিবীয়দের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৩০৩ রানের।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে চতুর্থ দিনের শেষভাগে পাকিস্তানকে ‘ঐতিহাসিক’ পঞ্চম দিনের আভাস দিয়েছেন ইয়াসির। কাইরন পাওয়েলকে শান মাসুদের অসাধারণ এক ক্যাচে আউট করেছেন তিনিই।
এখন সিরিজ জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গড়তে হবে ইতিহাস। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এই মাঠে চতুর্থ ইনিংসে ২৯৪ রান করেছিল উইন্ডিজ, সর্বোচ্চ সেটাই। সেই ম্যাচও অবশ্য ৭৫ রানে হারতে হয়েছিল তাদের।
মিসবাহ–ইউনিস অধ্যায়ের সমাপ্তি
মাঠে নামার পর এগিয়ে এসে তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। আউট হয়ে ফেরার সময় প্রথমে এসে জড়িয়ে ধরলেন সতীর্থ ইউনিস খান। পরে পাকিস্তান দলের বাকি সতীর্থরা নেমে এসে দিলেন গার্ড অব অনার। কিন্তু আসা ও যাওয়ার মাঝে মিসবাহ-উল-হক মাঠে থাকলেন মাত্র ১৪ বল, করলেন মাত্র ২ রান!
দেবেন্দ্র বিশুর বলে উইকেটের পেছনে শেন ডরউইচকে ক্যাচ দিয়ে মিসবাহ ফেরার একটু পর ইউনিস নিজেও ফিরলেন সেই বিশুর শিকার হয়ে। তার ক্যাচটা নিলেন কাইরন পাওয়েল। ইউনিসের নামের পাশে তখন ৩৫ রান। আরও একবার সতীর্থরা নামলেন গার্ড অব অনার দিতে। এভাবেই শেষ হয়ে গেল পাকিস্তান ক্রিকেটে মিসবাহ-ইউনিস অধ্যায়। ডমিনিকা টেস্ট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ টানলেন দুজন।
এই সমাপ্তির মাঝেই একটা নতুন অধ্যায় শুরুর সম্ভাবনা আছে আবার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জেতার সুযোগ পাকিস্তানের সামনে। শেষদিনে পাকিস্তানের তাই প্রয়োজন ৯ উইকেট।