আসছে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কোন এক দিন পৃথিবী থেকে ৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে একটি বিশাল তারকা বিস্ফোরণ ঘটতে চলেছে। রাতের আকাশে জ্বলে উঠবে, যা শৌখিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদেরসহ মানুষের জীবনে একবারই মহাকাশে এমন অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকার সুযোগ করে দেবে।
রোববার ৭ এপ্রিল ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু ঘটনা জীবনে একবারই দেখার সুযোগ মেলে। এমনই এক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক রাতের আকাশে। তা আর কিছুই নয়, বিরাট এক তারকা বিস্ফোরণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাকাশের করোনা বোরিয়ালিস নক্ষত্রমণ্ডল বা নর্দান ক্রাউনের বাইনারি তারকা ব্যবস্থা খালি চোখে দেখতে সাধারণত খুবই ম্লান। তবে প্রতি ৮০ বছর বা এ রকম সময়ের ব্যবধানে এই নক্ষত্রপুঞ্জের দুটি তারার মধ্যে স্থানচ্যুতি ঘটে। এ সময় বড় সংঘর্ষে জড়ায় তারা। সংঘটিত হয় বিশেষ ধরনের পারমাণবিক বিস্ফোরণ।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলছে, ওই বিস্ফোরণের ফলে যে আলোর দ্যুতি ছড়াবে, সেটি দৃশ্যমান হবে একটি নতুন তারার মতো। আর তা ধ্রুবতারার মতোই উজ্জ্বল। মনে হবে, আমাদের রাতের আকাশে এ তারা হঠাৎই কয়েক দিনের জন্য হাজির হয়েছে।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিদ সুমার স্টারফিল্ড এ ঘটনার একটি যথাযথ নাম দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, নোভার (নবজ্যোতিষ্ক) এই ‘ফেটে পড়া’ দেখতে খুবই উৎসুক হয়ে আছেন তিনি।
নোভা নিয়ে গবেষণা করেছেন জার্মান জ্যোতির্বিদ ইওয়াখিম ক্রাউটার। অবসরে যাওয়া জার্মানির এই বিজ্ঞানী বলেন, টি করোনা বোরিয়ালিসের ওই বিস্ফোরণের দৃশ্যে নজর থাকবে অনেকের মতোই জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপেরও।
এই জ্যোতির্বিদ বলেন, বিরল ওই ঘটনা যখন ঘটবে, তখন সে দৃশ্য দেখতে টেলিস্কোপের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন আপনার নেই। শুধু ঘর থেকে বাইরে যান ও করোনা বোরিয়ালিসের দিকে তাকিয়ে থাকুন, তাতেই দেখবেন অভাবনীয় সেই দৃশ্য।
এ নিয়ে অন্তত তিনবার এমন ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকবে মানবজাতি। প্রথমবার এমন ঘটনা আবিষ্কার করেন ১৮৬৬ সালে আয়ারল্যান্ডের বহুশাস্ত্রবিদ জন বার্মিংহাম। এরপর একই ঘটনা আবার দেখা যায় ১৯৪৬ সালে।