১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সংগ্রামী সত্যেন সেনের হাতে যাত্রা শুরু করে উদীচী। শনিবার (২৯ অক্টোবর) সংগঠনটি পা দিল প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছরে। জাতীয় জীবনে অবদানের জন্য উদীচী সংগঠন হিসেবে পেয়েছে একুশে পদক।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে হাতিয়ার করে দেশ ও সমাজ বদলের সংগ্রামকে তরান্বিত করতেই উদীচীর যাত্রা। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন তথা মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে উদীচী।
‘শোষণের বেড়াজালে মানুষের প্রাণ, মুক্তির মিছিলে লড়াইয়ের গান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আলোচনা, গান, নাচ, আবৃত্তি, নাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সারা দেশেই চলে এই উদযাপন।
শনিবার বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন ছয়টি ভিন্ন ক্ষেত্রের ছয় বিশিষ্টজন। উদীচীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গোলাম মোহাম্মদ ইদু, প্রতিষ্ঠাকালীন সংগঠক ও ছড়াকার আখতার হুসেন, মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিস্ট নেত্রী লীনা চক্রবর্তী, বালাদেশের নারী ফুটবল দল গড়ে তোলায় যুক্ত মালা রানী সরকার, পাটকল নিয়ে আন্দোলনের সংগঠক মোহাম্মদ নওশের আলী এবং চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের সংগঠক সন্ধ্যা ভৌমিক জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর চা শ্রমিকদের নিয়ে শাহীন সরদারের লেখা ‘লড়াইয়ের গান’ পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। মাহমুদ সেলিমের কথা ও সুরে পরিবেশিত হয় মুক্তির গান ‘আমি সর্বহারা আমি শেকলছাড়া/হারাবার আর কিছু নেই।’ এরপর অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান।
আলোচনা পর্বের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বের শুরুতে ছিল উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের শিল্পীদের পরিবেশনায় দুর্নীতিবিরোধী গীতি-কাব্য-নাট্যালেখ্য ‘ধর ধর, চোর চোর’। সংগঠনের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিমের রচনা এবং সুরারোপ করা এ গীতি-কাব্য-নাট্যালেখ্যটির নির্দেশনা দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। এই নাট্যালেখ্যে দুর্নীতির নানা রূপ তুলে ধরার পাশাপাশি এ থেকে পরিত্রাণের উপায় দেখানো হয়।
এ পর্বে আরো ছিল মূকাভিনয়, একক সংগীত, দলীয় নৃত্য ও আবৃত্তি। এ ছাড়া সংগঠনের নাটক বিভাগ পরিবেশন করে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী পথনাটক ‘অজ্ঞাতনামা’।