এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে একটি ইটভাটায় নতুন এক স্বর্ণের খনি আবিষ্কৃত হয়েছে, এমন সংবাদে স্বর্ণ পেতে মাটির স্তুপ খুঁড়ছেন হাজারও মানুষ। তীব্র গরমে দিনের পাশাপাশি রাতেও টর্চ জ্বালিয়ে চলছে মাটি খননের কাজ। স্থানীয়দের ধারণা, মাটির নিচে লুকিয়ে আছে বিপুল পরিমান স্বর্ণ। তবে প্রশাসন বলছে, এটি নিছক একটি গুজব। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় আরবিবি ইটভাটায় এমন ঘটনা ঘটছে।
শনিবার (২৫ মে) বিকালে আরবিবি ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়, ইটভাটার ঠিক পশ্চিম পাশে একটি মাটির স্তুূপে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জটলা। সে জটলার পাশেই ছোট শাবল, কোদাল, বসিলা দিয়ে আস্তে আস্তে মাটি খনন করে বাছাই করছে বয়স্ক, নারী, পুরুষ, যুবক, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, দিনের চেয়ে রাতের মাটিতে বেশি স্বর্ণ পাওয়া যায়- এমন খবরে রাতে টর্চ লাইট আর মাটি খুঁড়ার যন্ত্র নিয়ে ইট ভাটায় ভিড় করছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে মাটি খুঁড়তে অন্য জেলা থেকেও আসছেন।
মাটি খননের এই কাণ্ড দেখতে আসা ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জের জনগাঁও এলাকার বেলাল বলেন, লোকজন দিন ও রাতের বেলায় আসতেছে মাটি খুঁড়তে। সবসময় লোক থাকলেও রাতে বেশি লোক থাকে। সবার মত আমিও দেখতে এসেছি। বিষয়টি মানুষ যেভাবে ছড়িয়েছে ওই রকম মনে হয়নি। গুজবের মতো মনে হচ্ছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা রহিমা নামের এক নারী বলেন, মাটিতে স্বর্ণ পাওয়া যাচ্ছে, এমন খবর শুনে এসেছি। অনেকে স্বর্ণের জিনিস পেয়েছে। তাই সকাল থেকেই মাটি খনন করছি। তবে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের কিছু মেলেনি। যদি স্বর্ণ পাই তবে পরিবারের জন্য খরচ করবো।
এ বিষয়ে আরবিবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক লিটন আলী বলেন, কাতিহার সামরাই মন্দিরের পাশ থেকে মাটি খনন করে ইটভাটায় স্তূপ করা হয়েছে। গুজব উঠেছে ওই মাটির স্তূপ থেকে স্বর্ণের জিনিস পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই সাধারণ মানুষ দিন রাত ওই মাটির স্তূপ খনন করে বাছাই শুরু করেছে।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, আজ শনিবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল ওই ইট ভাটায় সরজমিন ঘুরে গেছেন, তারা জানান সেখানে কোন স্বর্ণের অস্তিত্ব পাননি তারা। ওসি বলেন, এটি নিছক গুজব। লোকজন এখন দিনরাত্রি মাটি খুঁড়ে চলেছে। এ বিষয়ে উদ্বোধন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, যেহেতু ইটভাটা প্রত্নতত্ব বিভাগের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল দেখে ফিরে গেছেন। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি যেন না হয় সার্বক্ষণিক সেখানে নজরদারি করা হচ্ছে।