অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন শিমুল শর্মা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার লাখ লাখ ফ্যান ফলোয়ার্স! এক নামে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’র শিমুল নামে পরিচিতি তিনি। নাটকটির অন্যান্য চরিত্রগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে শিমুল দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছেন।
তরুণ এ অভিনেতা জানালেন, ‘যারা অভিনয় করছেন সকলের সাপোর্টের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।’
জনপ্রিয় পরিচালক কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ (সিজন ৪)-এর ৩৩ পর্ব প্রচার হয়েছে। কাবিলা, হাবু, পাশা, শিমুল, ইভা, জুয়েল, শিরিন চরিত্রগুলোর সঙ্গে প্রতি পর্বে শিমুলের উপস্থিতি বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে দর্শকের। শিমুল মনে করেন, ‘দর্শক গল্পের সঙ্গে নিজেদের মিশিয়ে ফেলতে পারে এবং গল্পে পরস্পরের যে বন্ধুত্ব সেটা বেশি পছন্দ করে দর্শক।’
চ্যানেল আই অনলাইনকে শিমুল বলেন, সবার ভালোবাসা পেয়ে অভিনয় করা এখন শুরুর দিকের তুলনায় কিছুটা সহজ হয়েছে। মারজুক ভাই, চাষী ভাই, মিশু ভাই, পলাশ ভাইয়ের সঙ্গে স্ক্রিনে সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করতে আগে খুবই ভয়ে থাকতাম। কারণ তারা যে মাপের অভিনেতা, আমি সেই তুলনায় কিছুই না। এখন কিছুটা ফ্রি হতে পেরেছি। তাই অল্প অল্প সহজ লাগে।
২০১৭ সালে অমির ছয় নম্বর সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন শিমুল। অভিনেতা নয়, প্যাশনের জায়গা থেকে শিমুল এসেছিলেন পরিচালক হতে। তিনি এখন তিনি এক নম্বর সহকারী পরিচালক। অভিনয় করলেও আগামীতে পরিচালনা করতে চান শিমুল।
শিমুল বলেন, অমি ভাই আমার মেন্টর। তার কারণে আজ আমি শিমুল। আমার জন্য কোনটা কখন কী করলে ভালো হবে, সেটা উনি ভালো বোঝেন। যখন অমি ভাই নির্দেশ দেবেন সেদিন হয়তো কিছু শুরু করবো। পুরোটাই অমি ভাইয়ের উপর নির্ভর করছে। তবে আমি দর্শকদের আগেই আশা দিয়ে রাখতে চাই না। যখন পরিচালনা করবো আমার বিশ্বাস তারা সাপোর্ট করবেন।
অভিনয়ে পরিচিতি পাওয়ায় নির্মাতা হওয়ার ইচ্ছে কি কমে যাচ্ছে? প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গে হেসে দিলেন শিমুল। বললেন, মানুষ এখন আমাকে নিয়মিত দেখতে পাচ্ছে। সামনে হয়তো আমার ভুল ধরতে শুরু করবে। তাই অভিনয়টা এখন আমার মধ্যে ছেলেখেলার মতো নেই। এ কাজের প্রতি আমার সম্মান বাড়ছে এবং আমি যথাযথ সততা নিয়ে কাজ করছি। এ জন্য আমার নির্মাতা হওয়ার ইচ্ছে একবিন্দুও কমেনি। ওটাই আমার ‘আল্টিমেট গোল’। তাই এই গোলটা আমি দেরীতে হলেও দিতে চাই।
জিয়াউল হক পলাশের পর পরিচালক অমির নতুন আবিষ্কার শিমুল। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ ‘কাবিলা’ চরিত্র দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত পলাশকে অন্য নির্মাতাদের কাজেও নিয়মিত পাওয়া যায়। কিন্তু শিমুলকে এখনও দেখা যায়নি। শিমুল জানালেন, প্রচুর কাজের প্রস্তাব পেলেও তিনি হাসিমুখে না করছেন। সেখানে ‘না সম্মোধন’ এ তার লাজুকতা ও বিনয়ের কমতি থাকে না।
শিমুল বলেন, অভিনয়ের জন্য ডাক আসে। কিন্তু আমি আশাহত করি না। বলে থাকি, হয়তো সামনে কাজ হবে। আমাকে আরেকটু শিখতে দেন, বড় হতে দেন। কারণ, আমি এখনও অনুভব করি ক্যামেরার সামনে কথা বলা আর সাধারণভাবে কথা বলার অনেক পার্থক্য। আমি চেষ্টায় কমতি রাখছি না। সবচেয়ে বড় কথা হলো, অমি ভাই আছে বলে সবকিছু সম্ভব হচ্ছে। তাই তার প্রতি সবসময় অনুগত। সারাজীবন তার প্রতি আমার এই শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।
শিমুল মনে করেন, অভিনেতা হয়ে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যতটা কঠিন, পরিচিতি পেয়ে সামান্য ভুলে সবকিছু হারিয়ে ফেলা ততোটা সহজ। তাই তিনি বললেন, যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ। ভালোবাসে বলেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমি ফেনীর মতো মফঃস্বল শহর থেকে উঠে আসা ছেলে। বিনয় বিষয়টা পরিবারের কাছ থেকে শিখেছি। এও শিখেছি মানুষের ভালোবাসার উপরে কিছু নাই।
”মানুষ রাস্তা ঘাঁটে দেখা হলে ছবি তোলে, অভিনয় নিয়ে কথা বলে এটা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। চাইলেই মানুষদের ইগনোর করতে পারি না। মানুষের এই ভালোবাসাটা আমি হারাতে চাই না। মানুষ যেভাবে ভালোবাসছে, সেটা আমাকে রক্ষা করতেই হবে।আগামীতে আমি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এর বেশি আমার আর কিছু চাওয়া নেই।”- বলছিলেন শিমুল।