জেলেনস্কির জাতিসংঘের ভাষণের পর থেকেই ইউক্রেনের সঙ্গে পোল্যান্ডের দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করেছে। কারণ, নাম উল্লেখ না করে ওই বক্তৃতায় পোল্যান্ডকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। এরপর সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য আমদানি এবং দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ না করার বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছে পোল্যান্ড।
ডয়েচ ভেলে জানিয়েছে, পোল্যান্ড বলছে তারা আর ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করবে না। কারণ এর ফলে নিজের দেশের কৃষকদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি ইউক্রেনকে আর অস্ত্র সরবরাহ করা হবে না বলে জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জেলেনস্কির দেশ থেকে পোল্যান্ড যে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য আমদানি করছিল, তা আর করা হবে না। শুধু পোল্যান্ড নয়, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়াও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মূলত, কৃষ্ণসাগরের রাস্তা দিয়ে ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য আফ্রিকায় পাঠাতো। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাস্তাটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়া। পরে রাশিয়ার সাথে একটি চুক্তি করে ইউরোপে খাদ্যশস্য সরবরাহ করতে শুরু করে ইউক্রেন। তখন পোল্যান্ডসহ ইউরোপের বহু দেশ ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য কিনতে থাকে।
খাদ্যশস্য আমদানির কারণে অসন্তুষ্ট হয়েছেন পোল্যান্ডের কৃষকরা। এর ফলে তাদের ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়েছে। সে কারণেই পোল্যান্ড সম্প্রতি শক্ত অবস্থান নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার জাতিসংঘের ভাষণে বিষয়টি উল্লেখ করেন।
এতেই চটেছে পোল্যান্ড, তারা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায়। এরপর দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে আর অস্ত্র সরবরাহ করা হবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, পোল্যান্ড এবার নিজের সামরিক শক্তি উন্নত করার কাজে মন দেবে। নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করবে।
অথচ এই পোল্যান্ডই যুদ্ধের প্রথম দিন থেকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। পোল্যান্ডই প্রথম দেশ যারা ইউক্রেনকে প্রথম অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল। অন্য দেশ থেকে আসা অস্ত্র পোল্য়ান্ডের রাস্তা দিয়ে যাতে ইউক্রেনে ঢুকতে পারে, সেই ব্য়বস্থাও তারা করে দিয়েছে। কিন্তু জেলেনস্কির বক্তৃতার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করেছ।