দেশের সর্বাধুনিক সিনে থিয়েটার ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’ সুস্থ ধারার সিনেমা প্রদর্শনের মাধ্যমে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে আস্থা অর্জন করেছে। সাফল্যের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি শুক্রবার (৮ অক্টোবর) ১৮ বছরে পা রাখতে যাচ্ছে।
শুধু সিনেমা প্রদর্শন নয়, পাশাপাশি প্রযোজনাও শুরু করেছে স্টার সিনেপ্লেক্স। ২০১৯ সালে সিনেপ্লেক্স প্রযোজিত সিনেমা ‘ন ডরাই’ মুক্তি পায়। সার্ফিং ও নারীর ক্ষমতায়ন উপজীব্য করে নির্মিত এ সিনেমাটি সে বছর ছয়টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করে।
পরবর্তীতে আর সিনেমা প্রযোজনা করেনি স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল। তবে কোভিড সংক্রমণ না ছড়ালে এতোদিনে আরও সিনেমায় লগ্নী করতেন বলে জানালেন তিনি।
বগুড়ার পুলিশ প্লাজা শপিং মলে সিনেপ্লেক্সের নতুন শাখা চালু হচ্ছে আগামী বছর। পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চ্যানেল আই অনলাইনকে এমনটাই জানান রুহেল।
মাহবুবর রহমান রুহেল বলেন, ইচ্ছে ছিল বছরে কমপক্ষে চারটি প্রোডাকশন (সিনেমা) নির্মাণের। কিন্তু কোভিডের কারণে এতটাই খারাপ অবস্থা ছিল যে সবকিছুতে অনিশ্চয়তা চলে আসে। অপেক্ষা করছিলাম কোভিড কবে শেষ হয়ে জীবন আবার স্বাভাবিক হবে। এখন ভ্যাকসিন চলে এসেছে, সংক্রমণের হার একেবারে কমে এসেছে। এখন নতুন করে আবার সিনেমা নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, লিবারেশন ওয়ার (স্বাধীনতা যুদ্ধ), মাদকের কুফলসহ বিষয়ভিত্তিক সিনেমা নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের নির্মিত সিনেমায় একেকটি শিক্ষণীয় বার্তা থাকবে। পরিকল্পনায় আছে ২০২২ সাল থেকে বছরে কমপক্ষে চারটি করে সিনেমা করবো।
‘কোভিডে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা আর্থিক সংকটে পড়েছিলাম। সংকট কাটিয়ে উঠতে একটু সময় লাগছে। ইনশাল্লাহ আমরা খুব শিগগির সিনেমা নির্মাণে নামবো। আশা করবো, সবসময়ের মতো আগামীতে সকলের সাপোর্ট পাবো।’- বলছিলেন রুহেল।
রুচিশীল দর্শকদের প্রথম পছন্দ স্টার সিনেপ্লেক্স। সেই সব দর্শকের চাহিদামতো বাংলা সিনেমা নির্মাণ ও প্রদর্শন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, স্টার সিনেপ্লেক্স নির্মিত হয়েছে ভালো এবং হারিয়ে যাওয়া দর্শক ফেরাতে। সেই সব দর্শকদের টেস্ট ভিন্ন। এ কারণে আমরা ইচ্ছে থাকার পরেও দর্শকদের কথা ভেবে যেকোনো বাংলা সিনেমা দেখাতে পারিনা। তবে গত কয়েক বছরে তরুণ নির্মাতারা ভালো ভালো সিনেমা নির্মাণ করছেন।
তিনি বলেন, স্মার্টফোনের কারণে নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইমের মতো বড় প্লাটফর্ম মানুষের হাতে এসেছে। চাইলে বাসায় বসে বিশ্বমানের সিনেমা দেখতে পারছে। কিন্তু যে কোনো কারণে সিনেমা হলে সাবকন্টিনেট (উপমহাদেশ) এর সিনেমাগুলো দেখানো যাচ্ছে না। আমরা এখন গ্লোবাল। বাসা থেকে সেইসব দর্শকদের টেনে সিনেমা হলে আনা অনেক কঠিন। সেজন্য ভালো মানের কনটেন্টের কোনো বিকল্প নেই। নির্মাতাদের এসব বিষয় ভেবে কিছুটা স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করে সিনেমা নির্মাণ করা উচিত।
২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে যাত্রা শুরু করে স্টার সিনেপ্লেক্স। নান্দনিক পরিবেশ, সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্বলিত সাউন্ড সিস্টেমসহ নানা অভিনবত্বের মধ্য দিয়ে দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের আকৃষ্ট করে প্রেক্ষাগৃহটি।বর্তমানে একটি ভিআইপি হলসহ মোট পাঁচটি হল রয়েছে বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে। এ ছাড়া ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ার এবং মহাখালীর এসকেএস টাওয়ারে দু’টি শাখা রয়েছে। সম্প্রতি মিরপুরে চালু হয়েছে চতুর্থ শাখা। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরেও চালু হচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স।